বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা বাঁধ পাবনার ঐতিহাসিক মুজিববাঁধের ওপর নির্মিত সড়কটি আধুনিকায়ন করা হলে আপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে পাবনার দক্ষিনাঞ্চলের অবহেলিত লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর। মূলত তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মধ্যদিয়ে অর্থনৈতিক ব্যাপক পরিবর্তন সৃষ্টি হতে পারে। জেলার ঈশ্বরদী, লক্ষীকুন্ডা, চরগরগরি, আওতাপাড়া, পাবনা সদর, হেমায়েতপুর, দোগাছী, ভাড়ারা, চরতারাপুর ইউনিয়ন, সুজানগর বেড়া উপজেলা ও পাবনার সীমান্তঘেঁষে থাকা অবহেলিত চরাঞ্চলের লক্ষ মানুষের ব্যবসা, কৃষি, শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন তরান্বিত হবে। মুজিববাঁধের সড়কটির আধুনিকায় হলে কৃষক দিনে দিনেই নগরবাড়িঘাট হয়ে রাজধানীতে পণ্য সরবরাহ করবে সহজেই। এছাড়া পাবনার ঈশ্বরদী আওতাপাড়ায় উৎপাদিত মৌসুমি ফল আম, লিচু, পেয়ারাসহ বিভিন্ন প্রকারের দেশি-বিদেশি ফল দূর-দূরান্তে নেয়া সহজ হবে। বাঁধ ঘেঁষে কৃষি অঞ্চল গড়ে উঠেছে। মাইলের পর মাইলজুড়ে কৃষকের ক্ষেত বিস্তৃত। ধান, গম, পেঁয়াজ, পাট, আঁখ, চিনাবাদাম, আলু, পটল, রসুনসহ শাক-সবজিতে ভরপুর। কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য, কাঁচা তরি-তরকারি সহজেই পাবনার বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চল থেকে রাজধানীতে নিতে পারবে। এতে অর্থনৈতিকভাবে বেশি সাবলম্বী হবে এবং যাতায়াত দূরত্ব ভোগান্তি কমবে। এই সড়কটি সংস্কার করলে পাবনার অর্থনৈতিক অঞ্চল উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার নগরবাড়ী নৌবন্দর থেকে দেশের বৃহত্তর প্রকল্প রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পাবনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ঈশ্বরদীতে সহজে যাতায়াত, মালামাল বহনের পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার আনবে নতুন মাত্রা। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের এক তৃতীয়াংশ সরবরাহ হয় পেঁয়াজ ভাণ্ডার পাবনা জেলা থেকে। মুজিববাঁধের রাস্তাটির উন্নয়ন হলে কৃষক নগরবাড়িঘাট হয়ে ঢাকায় পণ্য সরবরাহ করবে সহজেই।
পাবনা সদরের কোমরপুরে কৃষক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, সড়কটি মিনি হাইওয়ে হলে আমাদের ক্ষেত থেকে উৎপাদিত ফসল আমরা দূর-দূরান্ত নিয়ে গিয়ে দিনে দিনেই বিক্রয় করে বাড়ি ফিরতে পারবো। মুজিববাঁধ সড়কের পাশে কয়েককাঠা জায়গার উপর শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে সোহাগ রহমান তিনি বলেন, মুজিববাঁধ সড়ক আধুনিকায়ন হলে প্রতিষ্ঠানের মালামাল আনা নেয়ার অনেক সহজ হবে।
সরজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরদী রূপপুর থেকে বেড়া উপজেলার কাজিরহাট পর্যন্ত বাঁধের উপর নির্মিত ১৫৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কের অধিকাংশ জায়গায়ই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের কোথাও ছোট-বড় গর্ত আবার কোথাও বাঁধের মাটি ধসে পড়ে রাস্তায় তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। প্রতিদিন শত শত বালু বোঝাই ড্রামট্রাক আর বৈধ-অবৈধ শতাধিক ইটভাটার ভারীযান যাতায়তে সড়কটি যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
পাবনা সওজ কর্তৃপক্ষ গত ২০২১ সালে সর্বশেষ মুজিববাঁধের ৫ কিলোমিটার সড়কে ইট-খোয়ার জোড়াতালি দিয়ে ভাঙা স্থানগুলোতে ভরাট করতে দেখা যায়।
পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, পাবনার সড়কগুলোতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা ঐতিহাসিক মুজিববাঁধ সড়কটির উন্নয়ন করতে ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা দিয়েছি, আশা করি দ্রুত এই সড়কটির উন্নয়ন হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন