ইয়াছমিন আক্তার (৪৫) স্বামী পরিত্যক্তা নারী। নেই পিতা নেই কোন ভাই-বোন। পিতার বাড়িতে বৃদ্ধ মাকে নিয়েই ঝুপড়ি ঘরে বসবাস। বিভিন্ন ব্যাংক এনজিও থেকে ঋণ নিয়েই হয়ে উঠে ক্ষুদ্র খামারী। নয় বছর ধরেই ঋণ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান কয়েকটি দুধের গরু দিয়ে চালাচ্ছেন খামার। দৈনিক দুধ বিক্রির টাকা দিয়েই সাপ্তাহিক মাসিক কিস্তি পরিশোধের পাশাপাশি সংসার চলছে মা মেয়ের। কিন্তু হঠাৎ অসহায় সেই খামারির ওপর নেমে আসে বিপদ। এযেন মরার ওপর খরার গা। এক রাতেই একের পর এক গরু মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ে। শেষ হয়ে যায় সব স্বপ্ন। ঘটনাটি হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বাদামতল এলাকার মেহেরআলি চৌধুরী বাড়িতে ঘটেছে। গত রোববার রাত পৌনে এগারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গরুগুলো হারিয়ে মাটিতে গরাগরি করছেন ইয়াছমিন। তিনি বলেন, প্রতিদিনের মত সন্ধ্যায় জমিন থেকে কেটে আনা এলোচি শাক (এক প্রকারের শাক) খাওয়ান সাথে কুড়া ভুষি। কোন রকম ওষুধও খাওয়ান নি। রাত দশটার দিকে হঠাৎ সবচেয়ে বড় গরুটি (গাভিন) জিহ্বা কামড় দিয়ে মাথা মাটিতে পড়ে যায়। মুহূর্তে শেষ। তার পরপরই বাকি তিনটা। চিকিৎসককে কল করার সময় দেয়নি। বেঁচে আছে ছোট্ট একটা বাচুর। তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট, সিএসএস, প্রত্যাশী, আস্থা ফাউন্ডেশন, ঘাসফুল, বাংলাদেশ এক্সটেনশন এডুকেশন সার্ভিসেস (বিজ), টিএমএসএস, এসএস, আশা ব্যাংক, সাজেদা ফাউন্ডেশন থেকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ নিয়েছেন। বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ টাকা ঋণ। জানিনা এখন কি হবে। এদিকে ঘটনার পর পরই ঋণ দেয়া বিভিন্ন এনজিও’র কর্মকর্তা, পশু চিকিৎসক ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নাবিল ফারাবি বলেন, একসাথে চারটি গরু মারা যাওয়া খুবই মর্মান্তিক। কেন মারা গেল তা উদঘাটনে কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলম ঘটনা শুনে বলেন, যত ধরনের সহযোগিতা করা যায় তা করার চেষ্টা করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন