শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

অভিযুক্ত দু’শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে গড়িমসির অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

পার্বতীপুর উপজেলার দু’জন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবশেষে বিভাগীয় মামলা রজুসহ চাকুরী হতে বরখাস্ত কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছে কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দানের নামে বিভাগীয় নির্দেশনা কার্যকর গড়িমসির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকগণ মোটা অর্থের বিনিময়ে দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছে বলে প্রচারণাসহ নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। পার্বতীপুর উপজেলার মৌলভীর ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান এবং শিক্ষিকা রেবেকা খানমের বিরুদ্ধে ৩০/০৮/১৬ইং পার্বতীপুর শিক্ষা অফিসার মোঃ আখতারুল ইসলাম দু’জন সহকারী শিক্ষা অফিসারকে নিয়ে অভিযোগ তদন্ত করে স্মারক নং- ৯৯৭, তাং- ২১/০৯/১৬ইং প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে দাখিল করেন। প্রেক্ষিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দিনাজপুর, স্মারক নং- জেপ্রাশিঅ/দিনাজ/বিমা/২০১৬, তাং- ০৩/১০/১৬ইং উক্ত শিক্ষক দু’জনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ মোতাবেক বিভাগীয় মামলার অভিযোগনামা প্রেরণ করেন। পৃথক পৃথক অভিযোগ নামায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষকগণ নিয়মিত যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আগমন ও প্রস্থান করেন না। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিখনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা- ১৯৮৫ এর বিধি ৩ (বি) মতে অসদাচরণের সামিল ও শাস্তি যোগ্য অপরাধ করিয়াছেন মর্মে একই ধারার ৪(৩) (ডি) মোতাবেক চাকুরী হতে বরখাস্ত দন্ড প্রদান সহ উক্ত বিধির অন্যান্য ধারা অনুযায়ী দ- প্রদানে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১০ দিন অর্থাৎ ১৩ই অক্টোবর/১৬ পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দেওয়া হলো। তাছাড়া সহকারী শিক্ষিকা রেবেকা খানম কর্তৃক সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের একই দিনে তদন্তকালে ওই শিক্ষিকা মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা চেয়েছিল। ইতিমধ্যে কয়েক দফা তদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোছাঃ রেবেকা খানম সহকারী শিক্ষক মৌলভীর ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আপনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের (প্রধান শিক্ষক) বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন উদ্দেশ্য প্রনিত স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে সাময়িক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। একাধিক তদন্তে উক্ত শিক্ষক দু’জনকে দোষী চিহ্নিত করা হলেও কেন এতো দিনেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এ নিয়ে সচেতন মহলে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যে, প্রমানিত হওয়ায় এবং দু’শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের যথার্থতা প্রমাণিত মর্মে পার্বতীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিবেদনে উঠে আসার পরেও অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দানের অন্তরালে তাদের বাঁচাতে অর্থ বানিজ্যর ইঙ্গিত প্রশ্ন বিদ্ধ। উপজেলা শিক্ষা অফিসার পার্বতীপুর আক্তারুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চাকুরী বিধি পরিপন্থি স্বেচ্ছাচারিতা মূলক কাজে লিপ্ত থাকায় এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগকারী ওই দু’জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনের আলোকে অবশ্যই জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবেন। ব্যবস্থা গ্রহণে ধীর গতি বোধগম্য নয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সমেশ চন্দ্র মজুমদার প্রায় ৪ সপ্তাহ হতে ২/১দিনের মধ্যেই শাস্তিমূলক চিঠি ইস্যু করা হচ্ছে বলে জানান, তবে চিঠির কোন হদিস নেই। বিভাগীয় উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ রংপুর বিভাগ রংপুর মোঃ মাহবুব এলাহী জানান, পার্বতীপুরের মৌলভীর ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই দু’শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবেন দিনাজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। গত রোববার বিকালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সমরেশ মজুমদার এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং তাদেরকে আত্মপক্ষকে সমর্থনের সুযোগ দিয়েছি। অভিযুক্তরা স্বহস্তে লিখিত জবাবে তাদের সকল দোষ অস্বীকার করে একটি আবেদন করেন। আমি অভিযুক্তদের অন্যত্র বদলীর জন্য বিভাগীয় শিক্ষা অফিসার অবহিত করি। অভিযুক্ত শিক্ষকদের এ সপ্তাহে তাদের শুনানীর জন্য জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন