শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

রাজশাহী-চাঁপাই মহানগরী সড়ক খানাখন্দে চলতে গিয়ে কমাতে হয় যানের গতি, ঘটে দুর্ঘটনা

প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. হায়দার আলী, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) থেকে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী মহানগরী সড়কের বেহাল দশা, খানাখন্দে ভরা, যানচলাচলের গতি কমিয়ে দিচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই। চালক, হেলপার, হেলপারসহ ভুক্তভোগী মহল সড়কের নাম দিয়েছেন নরক যন্ত্রণা কিংবা মরণ ফাঁদ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকা যেতে যাত্রীদের দুর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হচ্ছে যেমন একদিকে ঠিক অনুরূপ প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই আছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিশ্বরোড় মোড়, হরিপুর, দারিয়াপুর, গৌরস্থান, বালিয়াঘাটা, কাশিমপুর, বাসুদবপুর, ফরিদপুর, সুলতানগজ্ঞ, সারাংপুর, কলেজগেট, মেডিক্যালগেট গোদাগাড়ী, মহিশালবাড়ী, সিএন্ডবি, রেলগেট, সাবদিপুর, কাদিপুর, গোপালপুর, বসন্তপুর রাজাবাড়ী এবং চাঁপাল পর্যন্ত মাইলের পর মাইল হাজারো খানাখন্দে ভরপুর। মাঝেমধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগ লোক দেখানোভাবে কিছু পিচ, খোয়া দিয়ে রোলিং করে তাদের দায়িত্ব শেষ করেন কিন্তু পরের দিনই সেগুলো উঠে যায় এবং যানবাহনের চাকায় খোয়া ও পাথরগুলো জনসাধারণের জন্য বিপদের কারণ হয়ে যায়। কেন না কিছুদিন পূর্বে মহিশালবাড়ী বাজারে যাত্রীবাহী ঢাকাগামী চেয়ার কোচের চাকায় কয়েকটি পাথর হুমায়নের দোকানে আঘাত করে এতে ২ জন আহত হন এবং দোকানের সোকেসের গ্লাস ভেঙে যায়। মাসুমের হোটেলে একই ঘটনা ঘটে। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো হালকা ভারী যানবাহন চলাচলে করলেও রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে তেমন কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে গোদাগাড়ীর ফিরোজ চত্তর এলাকায় আধা কিলোমিটার রাস্তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, ওই স্থানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা লেগেই থাকতো। সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী রাজশাহী-১ আসনের এমপি আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরীর হস্তেক্ষেপে সড়ক ও জনপথ বিভাগ রড় সিমেন্ট, পাথর দিয়ে ঢালাই রাস্তা নির্মাণ (কংক্রিট রাস্তা) করায় ওই স্থানটি খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে। তবে তার পাশে পিচ কার্পেটিং রাস্তাটি মাঝেমধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। রাস্তা খানাখন্দে ভরপুর হওয়ায় দেশ ট্রাভেল, হানিফ পরিবণের এসি সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে। এ রাস্তায় এসি কোচ, চেয়ারকোচ, অ্যাম্বুলেন্স, যাত্রীবাহী ঢাকাবাস, গেটলক সার্ভিস, মাহানন্দা সার্ভিস, বাইপাস সার্ভিস, কার মাইক্রোসহ হালকা ভারী যানবাহনকে দীর্ঘ যুদ্ধ করে গন্তব্য স্থলে পৌঁছতে হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল, গোদাগাড়ী ৩১ শয্যাসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এ মহাসড়ক দিয়ে রোগী বহনকারী যানবাহনকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় অনেক সময় রোগী রাস্তায় মরে যায়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সোনা মসজিদ বন্দর থেকে এ সড়ক দিয়ে পিঁয়াজ, আপেল, আঙ্গুর, বেদনাসহ বিভিন্ন ভারতীয় পণ্য বহন করা হয়। শুধু রাস্তা খারাপের করণে ট্রাক, লরি, বাস, কোচ, কার, মাইক্রোর ভাড়া কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোন কোন সময় বেশি ভাড়া দিয়ে পরিবহন পাওয়া যায় না। ফলে বিভিন্ন পণ্যের সংকট সৃষ্টি হয় এবং দামও বৃদ্ধি পায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপজেলা সদর অফিসের সামনে থেকে কয়েক কিলোমিটার রাস্তায় শুধু ইট বিছানো রয়েছে তারা পরেও খানাখন্দে ভরা। এ এলাকাগুলো দেখে মনে হয় এটা মহাসড়ক নয় যেন কোন গ্রামের রাস্তা। ওই রাস্তায় এ প্রতিবেদক মহানন্দা সার্ভিসে যাওয়ার সময় অনেক যাত্রী বিরূপ মন্তব্য করেছেন তাদের মধ্যে লিপি, আশা, মনিরুল, আসাদ বলেছেন, যোগাযোগমন্ত্রী এ রাস্তা খবর জানেন না? এমপি-মন্ত্রী-নেতারা ঘরে শুয়ে কি ঘুমান। আমাদের ছেলেমেয়েদের কত কষ্ট করে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় এ রাস্তা দিয়ে যেতে হচ্ছে। সাংবাদিক ভাইদের তো কলম বন্ধ হয়ে গেছে, এসব নানাভাবে দোষারোপ করেন যাত্রী সাধারণেরা। এ মহাসড়কের রাজাবাড়ী এলাকায় পুকুর পাড়ের রাস্তাটি এক সাইড বসে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় হালকা ভারী যানবাহন চলাচল করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ট্রাক ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক কোষাধ্যক্ষ তৈইমুর রহমান ওরফে হরেজ মাস্টার জানান, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ভোলাহাট, আমনূরা-নাচোল রুটের রাস্তায় খানাখন্দে ভরা থাকায় যানবাহন চলাচলে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে, সময় বেশি লাগছে, গাড়ির টায়ার, লিপ স্পিংসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশের ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তা ক্ষতিগ্রস্তের জন্য ১০ চাকার ওভার লোডিং যানবাহনকে দায়ী করেন। তিনি সরকারের নিকট দ্রুত রাস্তাগুলো মেরামতের দাবিও জানান। গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ট্রাক মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম বলেন, সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের কারণে স্বাভাবিকের চাইতে অন্তত আধা ঘণ্টা থেকে ১ ঘণ্টা বেশি সময় যানবাহনে থাকতে হচ্ছে এবং এ সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। সৃষ্ট গর্তে সামান্য বৃষ্টির জমে যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। রাজশাহীÑচাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়কে ১৫টির মত বিপদজনক বাঁক রয়েছে ওইসব বাঁকগুলোতে সবচেয়ে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। যাতায়াত সহজ করার জন্য ওই বাঁকগুলো সোজা করা প্রয়োজন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন