সাতক্ষীরার শ্যামনগরে শ্বশুরবাড়ির পরিত্যক্ত রান্না ঘরের ভেতর থেকে জামাই আসাদুজ্জামান তাছের (২৫) এর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গাঙআটি গ্রামের মৃত সুরাত আলী সরদারের বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আসাদুজ্জামান তাছের একই ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের নুর হোসেন গাজীর ছেলে। আসাদুজ্জামান তাছেরের স্ত্রী গাঙআটি গ্রামের মৃত সুরাত আলী সরদারের মেয়ে মারুফা খাতুন (২৩) জানান, নিজেদের মধ্যে সাংসারিক দ্বন্দ্বের জেরে ৪ মাস আগে তার স্বামী তাকে মৌখিকভাবে তালাক দেয়। এরপরে গত সপ্তাহে আমি (মারুফা) নিজেই তাকে তালাকনামা পাঠাই। সকালে আমার (মারুফা) বড় বোনের রান্না ঘরের মধ্যে তার ঝুলন্ত লাশ দেখে আমাকে খবর দেয়। এছাড়া তার সাথে (তাছের) আগে পরে আমার কোন কথা হয়নি।
আসাদুজ্জামান তাছেরের বড় শালিকা ছকিনা খাতুন জানান, সকালে সূর্য ওঠার সময় আমি আমার পরিত্যক্ত রান্না ঘরটি গোছাতে গিয়ে ঘরের মধ্যে একজনকে ঝুলে থাকতে দেখে ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠি। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে গেছে। কিন্তু কখন কিভাবে সে এখানে এলো তা জানি না।
আসাদুজ্জামান তাছেরের বোন খাদিজা ও নিহতের মামী রহিমা খাতুন জানান, আসাদুজ্জামান তাছেরকে তার শ^শুর বাড়ির লোকজন জোর করে দু’বার স্বামী পরিত্যক্ত হওয়া গর্ভবতী নারী মারুফার সাথে বিয়ে দেয়। এরপর থেকে তারা তাকে মারপিটসহ নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করতো। ওরা তাছেরকে মেরে ফেলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসহাক আলী জানান, শ্বশুর বাড়ির লোকজন আসাদুজ্জামান তাছেরকে প্রায় সময় মারপিট করতো। লাশ দেখে মনে হচ্ছে না যে এটা আত্মহত্যা। কোন না কোন রহস্য অবশ্যই রয়েছে।
আসাদুজ্জামান তাছেরের পিতা নুর হোসেন গাজী জানান, কয়েক দিন আগে আমার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারপিট করে তার ফোন ও টাকা পয়সা কেড়ে নিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে সেই ফোন আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। খবর পাওয়া যাচ্ছে যে আমার ছেলে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার ছেলেকে ওরা জোর করে এক থেকে দেড় বছর আগে তাদের মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছিল। আমার ছেলেকে ওরা হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার প্রচার দিচ্ছে।
শ্যামনগর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহাবুর রহমান জানান, আসাদুজ্জামান তাছেরের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন