বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উপ সম্পাদকীয়

যমুনার তীরে ভাসমান হাসপাতাল যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হয়

প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোবায়েদুর রহমান
কিছু দিন আগে দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আক্ষেপ করেছেন। এদের একজন হলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোঃ নাসিম। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আক্ষেপ করে বলেছেন, বাংলাদেশে গরিবদের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে না। এ বিষয়টি নিয়ে মিডিয়াও কিছু লেখে না এবং পলিটিশিয়ানরাও কোনো মাথা ঘামান না। মোঃ নাসিম বলেছেন, পল্লী অঞ্চলের মানুষ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পায় না। কারণ গ্রামাঞ্চলে যেসব সরকারি পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে সেসব কেন্দ্রে ডাক্তাররা থাকতে চান না। যেসব ডাক্তারকে বদলি করা হয়, সেসব কেন্দ্রে তারা যেতে চান না। যারা বাধ্য হয়ে ওইসব কেন্দ্রে চাকরি করেন তারাও কেন্দ্রে বা অফিসে নিয়মিত থাকেন না। তারা জেলা সদরে অথবা উপজেলা সদরে এসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত না থাকার কারণে বেশ কয়েকজন ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তারপরেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
॥ দুই ॥
এমন একটি অবস্থার পটভূমিতে গত ৫ নভেম্বর শনিবার আমি স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত হতাশার ঘন অন্ধকারের মধ্যেও আশার ক্ষীণ আলো দেখতে পেয়েছি। ওইদিন আমি সপরিবারে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়েছিলাম। বেড়িবাঁধ দেখার পর বাঁধের ঠিক নিচ দিয়ে প্রবাহিত বিশাল যমুনা নদীর দিকে তাকালাম। প্রমত্তা যমুনাও কিছুটা শুকিয়ে গেছে এবং মাঝে মাঝে চর পড়েছে। আমরা একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যমুনা বিহার শুরু করলাম।
পানি কাটিয়ে এগিয়ে চলেছে নৌকা। কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পর দূর থেকে চোখে পড়ল একটি ছোটখাটো জনসমাবেশ। এত লোক কেন, প্রশ্ন করলাম মাঝিকে। মাঝি জানালেন, ওখানে আছে একটি হাসপাতাল। কৌতূহল বেড়ে গেল। হাসপাতালটি দেখতেই হবে। যখন আমাদের নৌকা হাসপাতালের সন্নিকটে এলো তখন আমার জন্য অপেক্ষা করছিল একটি প্রচ- বিস্ময়। নদী তীরে নোঙ্গর করা একটি স্টিমার। এটিই হলো হাসপাতাল। একটি চরের পাশে এই ভাসমান হাসপাতাল। এখানে একটি কথা বলা দরকার, গুগল ম্যাপে এই নদীকে বলা হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ। কিন্তু স্থানীয় জনগণ বলেন, এটি যমুনা। তো যে নামেই ডাকুন না কেন, এই নদী জল থৈ থৈ। তারপরেও দেখেছি ভারতের পানি প্রত্যাহারের ফলে আজ প্রমত্তা যমুনার এখানে ওখানে চর জেগে উঠেছে। তেমনি একটি চরের পাশে এই ফ্লোটিং হাসপাতাল বা ভাসমান হাসপাতাল। নাম ‘লাইফবয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’। নদী তীরের চর। সেই চরের ওপর কয়েকটি টিনের ঘর। হাসপাতালে যারা রোগী দেখাতে আসেন তারা এসব টিনের ঘরে দুই চার দিবস এবং রজনী যাপন করেন।
এই ভাসমান হাসপাতালে রয়েছে বিশেষ স্বাস্থ্য ক্যাম্প। এখানে বিনামূল্যে অর্থোপেডিক সার্জারি করা হয়। অর্থোপেডিক সার্জারির মধ্যে রয়েছে পা-বাঁকা, হাড় ভাঙা, হাত ও পায়ের পোড়া ও হাড়জনিত সমস্যা এবং সাধারণ অর্থোপেডিক অপারেশন। অপারেশন করেন দেশি ও বিদেশি সার্জন। বিদেশিদের মধ্যে আমি ফরাসি সার্জন দেখেছি এবং তাদের সাথে কথা বলেছি। চিকিৎসা নেয়ার আগে এখানে সিরিয়াল নিতে হয়। সিরিয়াল নেয়ার সময় সেই রোগীকে নিবন্ধন করা হয়। নিবন্ধন খরচ মাত্র ১০ টাকা। আর কোনো খরচ নেই। অপারেশন করার পর অথবা চিকিৎসা নেয়ার পর বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয়। পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
এই ফ্লোটিং হাসপাতালে শিশু এবং কিশোরদের ভিসারাল সার্জারিও করা হয়। শিশু ও কিশোর বলতে বোঝানো হয়েছে ৩ বছর থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত শিশু ও কিশোর। ভিসারাল সার্জারির মধ্যে রয়েছে একশিরা, হার্নিয়া, হাইপোস্পেডিয়াস ও প্রসাবের রাস্তায় বিভিন্ন সমস্যা জনিত অপারেশন। এসব অপারেশন, পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার এবং ওষুধপত্রও বিনামূল্যে। কোনো রোগী নিয়ে এসে যদি রোগীর পিতা-মাতা বা গার্ডিয়ানদের ৪-৫ দিন বা ১ সপ্তাহ থাকতে হয় তাহলে তারা নদী তীরস্থ চরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্মিত টিনের ঘরে থাকতে পারেন। এ ছাড়া একচালা টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে তারা হেসেল বা চুলা বানিয়ে পাক-শাক ও খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে নাস্তা ও খাওয়া-দাওয়াটা করতে হবে নিজ খরচে।
এখানে ই.সি.জি.সহ বিভিন্ন টিকা দেয়া হয়। এদের যন্ত্রপাতি অত্যাধুনিক। আমার সাথে ছিলেন বগুড়ার একটি নাম করা স্বাস্থ্য ক্লিনিকের প্যাথলজিস্ট। তিনি এই হাসপাতালে এক্স-রে প্লেট, অণুবিক্ষণ যন্ত্র এবং অন্যান্য প্যাথলজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট দেখলেন। বললেন, এক্সরের ফটো ঝকঝকে। মলমূত্র, রক্ত প্রভৃতি পরীক্ষার যন্ত্রপাতিও তাদের ক্লিনিকের যন্ত্রপাতির চেয়ে আধুনিক।
এই হাসপাতালে যেসব সেবা দেয়া হয় সেগুলো হলোÑ সাধারণ রোগসমূহের নিরাময়মূলক সেবা, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, মাতৃত্বজনিত সেবা, শিশু স্বাস্থ্য পরিচর্যা, চোখের চিকিৎসা, রেফারেল পদ্ধতি (ফলো-আপ), অপারেশন থিয়েটার সার্ভিস, এক্স-রে, ই.সি.জি, সকল প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, যোগাযোগের মাধ্যমে দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের পরিবর্তন। বিশেষ সেবাসমূহÑ ঠোঁট কাটা ও তালু কাটার অপারেশন, পোড়া রোগীর অপারেশন, হাত-পা বাঁকা (অর্থপেডিক সার্জারি) অপারেশন, একশিরা/গোটার অপারেশন (হার্নিয়া, হাইড্রোসিল), টিউমার অপারেশন, চোখের ছানি অপারেশন (লেন্স লাগানো), দাঁতের বিভিন্ন চিকিৎসা (বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা), দীর্ঘমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রদান।
দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে চিকিৎসা নিতে। চট্টগ্রাম থেকে একজন মহিলা এসেছেন। তিনি উচ্চ বংশীয়া এবং উচ্চ শিক্ষিতা। অনেক জায়গায় ব্যর্থ হয়ে এই ভাসমান হাসপাতালের চিকিৎসায় তিনি ভালো হয়েছেন।
আমাদের দেশে শত কোটি টাকার মালিক এখন অনেকে। তারা কি গরিবদের মাঝে এমন বিনামূল্যে অথবা নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা পৌঁছাতে পারেন না? তারা ধন-সম্পদ শুধুমাত্র কামাই করে যাবেন। সেগুলোর ছিটেফোঁটাও কি কোনো দিন দরিদ্র জনসাধারণের মঙ্গলের জন্য ব্যয় করবেন না?
॥ তিন ॥
যে কয় দফা আমি সস্ত্রীক আমেরিকা যাই তার মধ্যে অন্তত ৩ দফায় আমরা দুজনেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমরা দুজনই চিকিৎসা করাই। আমাদের সমগ্র চিকিৎসা বিনামূল্যে সম্পাদিত হয়। চিকিৎসা খরচ বহন করে সরকার। আমাদের কাছে যে হেলথ কার্ড ছিল বা স্বাস্থ্য বীমা ছিল সেই স্বাস্থ্য বীমার অধীনে খরচ নির্বাহ করা হয়। আমাদেরকে শুধুমাত্র বিলের ওপর সই করতে হয়। ডাক্তার সাহেব বা হসপিটাল কর্তৃপক্ষ সরকারের নিকট থেকে সেই বিলের টাকা পায়।
আমার এক শ্যালক বাস করে আমেরিকার ভার্জিনিয়াতে। সে দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। মেজর সার্জিক্যাল অপারেশনে বাংলাদেশি মূল্যে তার বিল ওঠে ৮০ লাখ টাকা। তাকে পেমেন্ট করতে হয় ১৫ লাখ টাকা। আমাদের মতোই সেও হেলথ ইনস্যুরেন্স কার্ডের অধীনে এই চিকিৎসা সুবিধা পায়। আজও সে বেঁচে আছে এবং বহাল তবিয়তে ভার্জিনিয়াতে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে দিন কাটাচ্ছে।
এসব কথা মোটামুটি সকলেই জানেন। আজ দুনিয়া জুড়ে আনুমানিক দেড় থেকে দুই কোটি বাংলাদেশি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। এরা হলেন বাংলাদেশি ডায়াসপোরা (Diaspora)| । তাদের কয়েক কোটি আত্মীয়স্বজন বাংলাদেশে বাস করেন। তারা এসব সুযোগ-সুবিধার কথা নিশ্চয়ই জানেন। যারা জানেন না শুধুমাত্র তাদের জন্য আমি এসব কথা বলছি।
আরো দুটি ঘটনা বলে উদাহরণ দেওয়া শেষ করব। গত বছর আমি একা অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম। তার আগে আমি সস্ত্রীক যাই। প্রথমবার আমার অর্ধাঙ্গিনী অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা তো অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকও নই, অথবা পার্মানেন্ট রেসিডেন্টও (পিআর) নই। সুতরাং আমরা সেখানে চিকিৎসাসেবা পাব কেন? কিন্তু সেখানেও একটি ব্যবস্থা আছে। যেদিন আমি বা আমরা অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নামি সেদিন বা তার পরদিন আমাদের ছেলে আমাদের নামে হেলথ ইন্স্যুরেন্স করে। বিদেশিদের জন্য বিভিন্ন প্রকার হেলথ ইন্স্যুরেন্স রয়েছে। সেটা অস্ট্রেলিয়ান ১০০ ডলার থেকে শুরু করে ২০০, ৩০০, ৫০০ ডলারÑ এই ধরনের বিভিন্ন পর্যায়ের ইন্স্যুরেন্স রয়েছে। আমরা দুজন ১০০ ডলার করে ২০০ ডলারের হেলথ ইন্স্যুরেন্স করি। কথায় বলে, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই রাত হয়। সেখানেও আমরা ছোটখাটো অসুখে পড়ি। আমাদের দুজনের বিল আসে ১১০০ ডলার। অথচ আমাদেরকে কোনো পেমেন্ট করতে হয় না। ওই ২০০ ডলারের মধ্যেই সব কাভার্ড হয়ে যায়।
॥ চার ॥
সবশেষে ইংল্যান্ডের কথা বলি। ম্যানচেস্টারে আমার ছোট বোন থাকে। আমি যখন ম্যানচেস্টার পৌঁছি তখন আমার হাতের একটি হাড় ভেঙে গিয়েছিল। প্লাস্টার করা অবস্থাতেই আমি সেখানে যাই। আমার তো সেখানে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার কথা না। আমি খুব সংকোচ করছিলাম। বোনের ঘাড়ে চিকিৎসা বাবদ এতগুলো পাউন্ডের বোঝা চাপিয়ে দেব? কিন্তু আমার সংকোচ ও ভয় দূর করে আমার বোন বলল, “মেজদা, আপনি চিন্তা করবেন না। আমার প্যারেন্ট ক্যাটাগরিতে আমি আপনার ট্রিটমেন্ট করব।” প্রথমে একজন জিপিকে দেখানো হয়। জিপি আমাকে হসপিটালে রেফার করেন। চার দিন পর হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসি। আমার জন্য আমার বোনকে কোনো পাউন্ড খরচ করতে হয়নি।
সবশেষে আরেকজনের কথা না বললেই নয়। ‘দৈনিক ইনকিলাবে’ আমার এক কলিগ ছিলেন। তিনি ভিজিট ভিসা নিয়ে নিউইয়র্ক যান। সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় বা পলিটিক্যাল অ্যাসাইলামের জন্য আবেদন করেন। অ্যাসাইলাম পেতে তার বেশ কয়েক বছর লাগে। যতদিন অ্যাসাইলাম পাননি ততদিন তিনি ছিলেন ইল্লিগ্যাল বা অবৈধ। ইল্লিগ্যালরা কোথাও কোনো বেনিফিট পায় না। তো, আমার সেই কলিগ একবার গুরুতর অসুস্থ হন এবং তার বন্ধুরা তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়। হসপিটাল কর্তৃপক্ষ জানতে চায়, রোগী কি আমেরিকার নাগরিক? উত্তর হলো, না। তারপর ওরা জানতে চায়, রোগী কি আমেরিকার পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট বা গ্রিনকার্ড হোল্ডার? উত্তর হলো, না। তখন ওরা জানতে চায়, রোগীর কি কোনো ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে? উত্তর হলো, না। তখন চিকিৎসকরা একে অপরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে থাকেন। তারা প্রকাশ্যেই বলেন, এই রোগীর চিকিৎসা কোন বীমার আন্ডারে হবে? সে তো ইল্লিগ্যাল। তার চিকিৎসার কোনো রাস্তাই খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন একজন চিকিৎসক দৃঢ়তার সাথে বলেন, “আসুন, আমরা এখনই চিকিৎসা শুরু করি। ঐসব প্রশ্ন ভেবে বেশি দেরি করলে এই রোগী মারা যাবে। আমরা আমেরিকাতে বিনা চিকিৎসায় একটি মানুষকেও মরতে দিতে পারি না, সে দেশি হোক বা বিদেশি হোক, সে লিগ্যাল হোক আর ইল্লিগ্যাল হোক।”
এরপর তার চিকিৎসা শুরু হয়। ৭ দিন পর আমার সেই প্রাক্তন কলিগ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন। নিউ ইয়র্কে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, “তোমাকে কোনো টাকা পয়সা দিতে হয়নি?” সে বলে, “আমি বেকার, টাকা পয়সা পাব কোথায়? এ কথা আমি ডাক্তারদের সাফ জানিয়ে দিয়েছি। ডাক্তাররা পরে সম্ভবত পরিস্থিতির বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নিকট পত্র লেখে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সেই পত্র পড়ে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে বিল পরিশোধ করে”।
প্রিয় পাঠক ভাই-বোনেরা, এমন একটি দৃশ্য কি আপনারা বাংলাদেশে কল্পনা করতে পারেন? এখানে ডাক্তারের কাছে বা হসপিটালে গেলে প্রথমেই আপনাকে যেটি করতে হবে, সেটি হলো, “ফেল কড়ি, মাখ তেল”। আপনি যদি মাল দিতে না পারেন তাহলে হসপিটালের বারান্দায় আপনি মরে পড়ে থাকবেন। কেউ আপনার জন্য একফোঁটা অশ্রুও বিসর্জন দেবে না। আপনি যদি ডাক্তারের ফি দিতে না পারেন তাহলে বাইরে যে লোকটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট তালিকা মেইনটেইন করে সে আপনাকে ঢুকতেই দেবে না। অথচ আমরা কত প্রকারের চেতনার কথা বলি। এই চেতনা, সেই চেতনা ইত্যাদি। কিন্তু কেউ কি মানবতার চেতনার কথা বলে? যেমন বলেছিলেন আমেরিকার সেই চিকিৎসকরা? বলেছিলেন, “আমরা আমেরিকাতে বিনা চিকিৎসায় একটি মানুষকেও মরতে দিতে পারি না, সে দেশি হোক বা বিদেশি হোক, সে লিগ্যাল হোক আর ইল্লিগ্যাল হোক।” আমরা বাংলাদেশে সেই ধরনের মানুষ চাই, সেই ধরনের চিকিৎসক চাই। এখানে সব চেতনা এসে মিলিত হোক একটি বিশেষ চেতনায়। সেটি হলো, মানবতার চেতনা। রবীন্দ্রনাথ একটি প্রেমের গানে লিখেছেনÑ
কেটেছে একেলা বিরহের বেলা
আকাশকুসুম-চয়নে।
সব পথ এসে মিলে গেল শেষে
তোমার দুখানি নয়নে।
আমি আগেই বলেছি, এটি রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান। আমরা গানের মূল সুরটিকে একটু ঘুরিয়ে মানবতার পথে কি ধাবিত করতে পারি না? যেখানে বলতে পারি, “সব পথ এসে মিলে গেল শেষে/মানবতার ঐ চরণে”।
Journalist15@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মোঃসাহিদুল ইসলাম ১২ জুন, ২০১৭, ১০:২৭ এএম says : 0
আমি হার্নিয়া রোগে বোগছি। আমি এখন কি করতে পারি পরামর্শ চাই?
Total Reply(0)
মোঃসাহিদুল ইসলাম ২৪ মে, ২০২২, ৮:৪৭ পিএম says : 0
আমি বাংলাদেশের জন্ন্য কিছু করতে চাই
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন