শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

৪৭ কিলোমিটার সরু রাস্তায় বিড়ম্বনা

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের শঙ্কা

আবুল হাসান সোহেল, মাদারীপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কটি অত্যন্ত সরু ও ডিভাইডার না থাকাসহ নানা কারণে দক্ষিণাঞ্চলের ১২ জেলার ঈদে সড়কে চলাচল ব্যাহত হতে পারে। এই কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেত পারার আশংকা এলাকার মানুষের। এমন কি পদ্মা সেতু চালু হলে সরু সড়কের আরো চরম বিড়ম্বনা দেখা দিবে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের।
তবে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক বলছেন, রাস্তা প্রশস্ত করণের কাজ শিগগির শুরু হতে যাচ্ছে। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দাবি বার বার সড়কের এলাইনমেন্ট পরিবর্তনের কারণে এখনই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
মাদারীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের তথ্য মতে, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর অংশে ভাঙ্গা থেকে ভুরঘাটা পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার সড়কের রয়েছে। বর্তমানে সড়কটি ২৪ ফুট চওড়া। মাদারীপুর অংশের অনেক স্থানেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রয়োজনীয় নিজস্ব অনেক জমি রয়েছে। কোন কোন স্থানে জমি অধিগ্রহন করা লাগবে না। আবার যেখানে এ সড়কের দু’পাশে নিজস্ব জমি নেই সেখানে জমি অধিগ্রহণ লাগবে। তবে মহাসড়ক ফোর লেন নির্মাণ করতে যে পরিমান প্রশস্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। তাতে বর্তমানে মাদারীপুর অংশে মোট ৫৬ একর জমি অধিগ্রহন করা প্রয়োজন হবে বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দাবি করছে।
আরো জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের ব্যস্ত সড়কটি বর্তমানে ফরিদপুরের রাজবাড়ী মোড় থেকে সমুদ্র পাড়ের কুয়াকাটা পর্যন্ত প্রায় ২৩৬.৭৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। এই মহাসড়কটিকে নতুন করে হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করার প্রস্তাব এখন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে। আর মাদারীপুর অংশের ৪৭ কিলোমিটার সড়কের জমি অধিগ্রহন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জমির মালিকদের জমি অধিগ্রহনের নোটিশ প্রদান করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে এই মহাসড়কটি মূলত রুগ্ম দশায় পড়ে আছে। এই মহাসড়কে যান চলাচলের চাপ দিনদিন বেড়েই চলছে। আর দুর্ঘটনাও নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দেখা দিয়েছে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বর্তমানে যে পরিমান পরিবহন চলাচল করছে, তাতে পদ্মা সেতু চালু হলে সরু মহাসড়কের কারণে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হতে পারে। যানজটে নাকাল হয়ে পড়বে দক্ষিণাঞ্চলের পরিহনগুলো। চরম দুর্ভোগের শিকার হবে দক্ষিণাঞ্চলোর ১২ জেলার যাত্রীরা। তাই সবকিছু মিলে আসন্ন ঈদ যাত্রায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের যাত্রীদের।
শিবচরের পাচ্চর এলাকায় ঈগল পরিবহনের চালক মোয়াজ্জেল হোসেন বলেন, ‘এতো গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তবে সরু আর ডিভাইটার না থাকায় প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যদি সরু রাস্তা মেরামত করা হয় তাহলে যাত্রীদের কোন সমস্যা হয় না। আমরাও ভালো করে গাড়ি চালাতে পারি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারীতে রাখতে হবে।’
মাদারীপুরের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ‘গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় বার বার এলাইনমেন্ট পরিবর্তন হওয়ায় সংস্কার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে মহাসড়ক ফোর লেন নির্মান করতে যে পরিমান প্রশস্ত করার প্রস্তাব রয়েছে, তাতে বর্তমানে মাদারীপুর অংশে ৫৬ একর জমি অধিগ্রহন করা প্রয়োজন। নির্দিষ্ট করে কাজটি সম্পূর্ণ হলে আমরা কাজ করতে পারবো। তবে এবারের ঈদের সেটা সম্ভব না। যে কারণে যাত্রীদের কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতেই হবে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘এই মহাসড়কটিকে নতুন করে হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করার প্রস্তাব এখন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে। মাদারীপুর অংশের ৪৭ কিলোমিটার সড়কের জমি অধিগ্রহন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জমির মালিকদের জমি অধিগ্রহনের নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। বিলে দিয়ে দিলে সড়ক বিভাগ কাজ শুরু করবে।’ গুরুত্বপূর্ন এই মহাসড়কটিতে দ্রুত কাজ শুরুর দাবি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের। আর পদ্মা সেতু চালু আগেই নির্মাণ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সেতুর সুফল ভোগ করতে পারবেন বলে দাবি এলাবাসীর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন