নীলফামারীর সৈয়দপুরে খড়খড়িয়া নদীর শহর রক্ষা বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধের ওপর দিয়ে বালুবাহী ট্রাক ও বাঁধের গোড়ার মাটি দুর্বৃত্তরা কেটে নেয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানির স্রোতে ওই বাঁধের কোথাও ভাঙন দেখা দিলে বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা করছে শহরবাসী। অতি প্রাচীন বাঁধটির ১৬ কিলোমিটার জুড়ে কমপক্ষে শতাধিক স্থানে ভাঙনের ঝুঁকি রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের চান্দিয়ার ব্রিজ থেকে শুরু করে সৈয়দপুর পৌর এলাকার ১০নং ওয়ার্ডের পশ্চিম পাটোয়ারীপাড়া হয়ে পার্বতীপুরের বেলাইচন্ডী ইউনিয়নের শেষ সীমানা পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধ। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাঁধের কারণে সৈয়দপুর শহরের সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনাগুলো বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু বাঁধ ভেঙে গেলে ওইসব স্থাপনা পুরোপুরি হুমকির মুখে পড়ার আশংকা রয়েছে।
বিশেষ করে সৈয়দপুর বিমানবন্দর, সেনানিবাস, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা, ১৫০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সৈয়দপুর সরকারি কলেজ, বিসিক শিল্পনগরী, সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, সৈয়দপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, হাসপাতালসহ ছোট-মাঝারি শিল্প কারখানা ভয়াবহ প্লাবন জোনে অবস্থান করছে।
বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি ঢুকলে ওই স্থাপনাগুলো কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচফুট পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শহরের স্থাপনাগুলো। ভৌগলিকগত অবস্থানের কারণে নদীর প্লাবন স্তর থেকে সৈয়দপুর শহরের ওই স্থাপনাগুলো স্থান ভেদে তিন থেকে ছয় ফুট নিচে অবস্থান।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবু সৈয়দ আমিনুর রশিদ জানান, প্রতিবছর বর্ষাকালে বন্যার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার আগেই জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ দিয়ে পানি আটকিয়ে সরকারি বেসরকারি স্থাপনা রক্ষা করা হয়। উজানের পাহাড়ি ঢলের ফলে প্রতি বছর ৩/৪বার বিপদসীমা অতিক্রম করে বন্যার পানি। তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নার্থে পাকা ব্লক দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করা হলে অন্তত পক্ষে ১০০ বছরে বাঁধের কোন ক্ষতি হবে না।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, ওই বাঁধটি টেকসই করার জন্য আমরা ডিপিপির প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছি। সঠিক সময়ে তা বাস্তবায়ন হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন