শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মূল্যস্ফীতি সহনীয় করার উপায় ভাবা হচ্ছে

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশে মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে কী করা যায়, তা নিয়ে ভাবছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, অর্থনীতি এখন শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। ইউক্রেন-রুশ যুদ্ধ থেমে গেছে আরও ভালো হবে পরিস্থিতি। গতকাল বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

পণ্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, দাম কেন বাড়ছে-তার ব্যাখ্যা আমি আগে দিয়েছি। আমরা সারা বিশ্বের সঙ্গে একীভূত। অনেক দেশের সঙ্গে লেনদেন করতে হয়। কাজেই জিনিসপত্রের দাম একটু তো বাড়বেই। যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব এখন অস্থির। আশা করছি, যুদ্ধ থেমে যাবে, বিশ্ব স্থিতিশীল হবে এবং বাংলাদেশে জিনিসপত্রের দাম কমে আসবে।

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থানে- এমন দাবি করে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, যুদ্ধ থেমে যাবে এবং বিশ্ব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এতে দেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সর্বশেষ প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরের জন্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনায় কোনো কাটছাঁট হতে পারে কি না- এমন প্রশ্নও ছিল অর্থমন্ত্রীর কাছে।
তিনি বলেন, কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। চলতি অর্থবছরের জন্য জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি বহাল থাকবে এবং আমি মনে করি, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী না হয় এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে তাহলে প্রাক্কলিত জিডিপি অর্জন সম্ভব হবে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ব্যবস্থাপনায় কোনো পরিবর্তন আনা হবে না বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, বাজেটে ভর্তুকির ওপর কোনো চাপ নেই। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি যা ধরা হয়েছে, আমি মনে করি সেটি সহনীয় অবস্থানে থাকবে। যুদ্ধ প্রলম্বিত না হলে বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে আশা করছি।
পৌনে চার লাখ মেট্রিক টন জ¦ালানি তেল ও স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কার্গো আমদানিসহ ৬টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৫ হাজার ৬৮৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত মো. সাবিরুল ইসলাম এক ভার্চুয়াল ব্রিফিং-এ সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) কর্তৃক দুটি প্যাকেজে পৌনে চার লাখ মেট্রিক টন জ¦ালানি তেল আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জি-টু-জি-এর আওতায় আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে আগামী মে ও জুনের জন্য এ জ¦ালানি তেল ক্রয় করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্যাকেজ-এর আওতায় ইন্দোনেশিয়া’র পিটি বুমি সিয়াক পুসাকু জেপিন থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল) আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ২৭৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

এছাড়া প্যাকেজ-বি-এর আওতায় সিঙ্গাপুর-এর ইউনিপেক সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড থেকে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ ফুয়েল আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৭৮০ কোটি ৬ লাখ টাকা।
তিনি জানান, বৈঠকে পেট্রোবাংলা কর্তৃক সিঙ্গাপুর-এর মেসার্স ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড থেকে একটি এলএনজি কার্গো (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি চলতি পঞ্জিকা বছরের ১১তম কার্গো আমদানি। এতে ব্যয় হবে ৯৯১ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক মরক্কোর ওসিপি এসএ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৫৯ কোটি ৩৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।

তিনি জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক কাতার-এর মুনতাজাত থেকে ১৫তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৪০ কোটি ৪২ লাখ ২৭ হাজার টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক ঢাকার মেসার্স পোটন ট্রেডার্স ( প্রধান সরবরাহকারী: সিঙ্গাপুর-এর আরিস ফার্টিলাইজার্স গ্রুপ পিটিই লিমিটেড) থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১০০ কোটি ৮০ লাখ ৮১ হাজার টাকা।

তিনি জানান, এছাড়া বৈঠকে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর কর্তৃক ৩ মিলিয়ন বুকলেট তৈরীর কাঁচামালের পরিবর্তে ৩ মিলিয়ন তৈরি ই-পাসপোর্ট বুকলেট ভেরিডোস জিএমবিএইচ থেকে আমদানির জন্য ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৩৯ কোটি ৯৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা ব্যয় বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন