একমাস আগে ভারতের কোলকাতায় ডুবে যাওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট-০১-এর বিষয়ে তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। এ মর্মে একটি পত্র প্রেরিত হয়েছে ভারত সরকারের কাছে।
এদিকে ঐ জাহাজের ১৫ নাবিককে কোলকাতা থেকে উদ্ধারের কোন উদ্যোগ অদ্যাবধি নেয়া হয়নি। সেখানে মেরিন ক্লাবের একটি হোটেলে অনিশ্চিত জীবনা কাটাচ্ছেন তারা। বাঁচতে চেয়ে এই নাবিকরা একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছে সামাজিক যোগাযোগে।
নাবিকদের একজন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা শিবপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান। তিনি তার পরিবারের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলে জানিয়েছেন তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের অনেক কিছু জাহাজের সাথেই তলিয়ে যাওয়ায় তাদের সাথে বেশ কিছু ডকুমেন্টস হারিয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ঐ সাড়ে তিন মিনিটের ভিডিও বার্তায় জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট-১– এর প্রধান প্রকৌশলী ফাহিম ফয়সাল জানিয়েছেন, গত ২০ মার্চ ১৫ জন নাবিক পণ্যবাহী কন্টেইনার আনতে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঐ জাহাজ নিয়ে কলকাতায় যান। সেখানে ২৩ মার্চ পৌঁছান। ২৪ মার্চ কলকাতার নেতাজী সুবাস চন্দ্র ডকে (পণ্য খালাস স্থান) জাহাজে পণ্য বোঝাইয়ের সময় উল্টে ডুবে যায় জাহাজটি। এ সময় নাবিকেরা দ্রুত দৌড়ে নেমে পড়েন।
কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিয়ে মেরিন ক্লাব হোটেল (সি-ম্যান হোস্টেল) রাখে। তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট সহ যে ডকুমেন্টস গুলো ছিল সেগুলো পুলিশ নিয়ে যায়।
সেই থেকে সেখানে একরকম অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। কাউকে জিজ্ঞেস করে কোন উত্তর মিলছে না। তাদের কাছে কোনো টাকাও নেই। পড়ালেখার সনদপত্রসহ সব পোশাক জাহাজের মধ্যে রয়েছে।
ভিডিও বার্তায় বন্দীদশা থেকে মুক্তির আকুতি জানিয়েছেন নাবিকেরা। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
ফাহিম ফয়সাল বলেন, তাঁরা কলকাতা ও বাংলাদেশে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু দেশে ফেরাতে কেউ কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। দেশের মালিকপক্ষ নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কয়েক দিন ধরে আর কোনো যোগাযোগ করছে না। হোস্টেলে যেকোনো সময় খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। নাবিকদের সবাই দেশে ফিরতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উচ্চস্বরে আকুতি জানাতে থাকেন।
সবশেষে তারা আকুতি জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরা বাঁচতে চাই, আমাদের বাঁচান।’
এদিকে এ প্রতিবেদক শুক্রবার বিকেলে জাহাজের নাবিক মিজানুর রহমানের বাবা শরিফুল ইসলামের কথা বললে তিনি জানান তার ছেলের সাথে বৃহস্পতিবার কথা হয়েছিল আর কথা হয়নি।
শরিফুল ইসলাম অবিলম্বে সরকারের উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করেছেন।
এমভি মেরিনট্রাস্ট–০১ জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান মেরিনট্রাস্ট লিমিটেডের ক্যাপ্টেন সাহিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন