নেছারাবাদে স্বরূপকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ছাত্রী অভিভাবক দম্পত্তিকে ঝাড়ু পেটা করে বিদ্যালয় থেকে বের করার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রধান শিক্ষক শামসুল হকের বিরুদ্দে। ওই অভিভাবক দম্পত্তির তৃতীয় শ্রেনী পড়ুয়া মেয়েকে কোভিড-১৯ এর প্রথম ডোজের টিকা না দিয়ে জোড়পূর্বক দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়ার কারন জানতে চাওয়ায় তাদেরকে বিদ্যালয় থেকে এ কথা বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক এর বিচার চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন বরাবর একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন লাঞ্চিত হওয়া ওই দম্পত্তি। বুধবার সকালে তিনি শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর ওই অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার দুপুরে স্বরূপকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
লাঞ্চিত হওয়া ছাত্রীর মাতা মিতু বেপারী অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে ঐশ্বর্য দাস স্বরূপকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর একজন ছাত্রী। মঙ্গলবার তার মেয়েকে
বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। বিদ্যালয়ে এসে মেয়েটি মাঠে খেলাধুলা করছিল। এসময় আচমকা ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা হাসিনা বেগম পিছন থেকে এসে তার মেয়েকে ধরে কভিড-১৯ টিকা দেয়ার কথা বলে বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে নিয়ে যায়। এসময় তিনি ওই শিক্ষিকাকে বলেন তার মেয়েকে এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ দেয়া হয়নি। শিক্ষিকা হাসিনা বেগম সে কথা না শুনে বলেন ওটা আমি দেখে নেব। কোন সমস্যা নেই। এই বলে সে তার মেয়েকে শ্রেণীকক্ষে নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে টিকা দিয়ে ফেলে। টিকা দেয়ার পরে মেয়েকে বাসায় নেয়ার পথে কিছুটা অসুস্থতাবোধ করে। পরে অন্য একটি বিদ্যালয়ে চাকরি করা তার শিক্ষক স্বামীকে বিষয়টি অবগত করে মিতু বেপারী। তার স্বামী ছুটে এসে স্ত্রীকে নিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মেয়ের টিকার ব্যপারে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: শামসুল হক ও সহকারি শিক্ষক সুজন সমদ্দার মিতু বেপারীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এতে তার স্বামী একটু রাগন্নিত হলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল হক ওই দম্পত্তিকে ঝাড়ু পেটা দিয়ে বের করে দিতে তেড়ে আসেন। তখন তারা আত্মসম্মান নিয়ে দ্রুত স্কুল থেকে সড়ে পরেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল হক বলেন, তাদের সাথে তেমন কিছুই হয়নি। একটু ভুল বোজাবুজি হয়েছে। ঘটনার সময় আমি ছিলাম। বরং উল্টো ওই দম্পত্তি আমাদের উপর উত্তেজিত হয়েছিল।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: ইলিয়াস বলেন, ওই অভিভাবক দম্পত্তি আমার আমার কাছে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগ পেয়ে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফ হোসেন চৌধুরী, গিয়াস উদ্দীন এবং মঞ্জুমোল্লা-কে নিয়ে তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্য তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন