নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পাইকারি ও খুচরা বাজারে শীতের সবজি উঠতে শুরু করেছে। পিক আপ, ইজিবাইক, রিকশা-ভ্যানে এসব সবজি সরাসরি বাজারে আসছে। বিক্রিবাট্টাও ভালো। ফলে লাভবান হচ্ছেন এখানকার চাষিরা। ধান আলুসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে একের পর এক লোকসান গুনে এবার শীতের সবজিতে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন সৈয়দপুরের কৃষকেরা। উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙ্গালিপুর ও বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদ করা হচ্ছে বোতলাগাড়ীর শ্বাসকান্দর, পোড়ারহাট, বেংমারী, কাঙ্গালপাড়া এলাকায়। সেখানে দিনরাত সবজির পরিচর্যা করছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ পোকামাকড় দমনে স্প্রে করছেন, কেউবা কৃষি শ্রমিক দিয়ে সবজির পরিচর্যা করেছেন। বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা, করলা, লালশাক, পালংশাক, শিম, টমেটো, বেগুন, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়া, বরবটি, ডাঁটা, চিচিঙ্গা, পটোল, ঢেঁড়স, কাঁচা মরিচ প্রভৃতি সবজিতে চারদিক ভরে গেছে। শ্বাসকান্দর এলাকার চাষি তফুর, আমিনুল, তৌহিদুল জানান, ধানের দাম না পাওয়ায় শীতের সবজি আবাদ করে আগের চেয়ে আয় বেড়েছে। ছেলে মেয়েকে নিয়ে বেশ ভালো আছি। সৈয়দপুরের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি শিম ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ টাকা, নাপাশাক ৪০ টাকা, সরিষাশাক ২০ টাকা, মুলাশাক ১৫ টাকা, মুলা ২৫ টাকা ও টমেটো ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখানকার পাইকারি বাজার থেকে কিনে খুচরা দোকানিরা কেজিতে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা লাভ করছেন। অথচ পাইকারি বাজার থেকে খুচরা দোকানিদের দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। এ ছাড়া এই বাজার থেকে পাইকারেরা শীতের সবজি কিনে ট্রাকযোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারি বাজারের আড়তদার মমিনুল বলেন, চাষিরা সরাসরি এই বাজারে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারেন না। তারা সবজি প্রথমে আড়তে আনেন, তারপর আড়তদারেরাই চাষির সবজি বিক্রি করে দেন। বিনিময়ে আড়তদারকে পণ্য অনুযায়ী কমিশন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা গুনতে হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা ম-ল বলেন, এই উপজেলার প্রায় সব জমি সবজি চাষের জন্য উপযোগী। ধান ও অন্যান্য ফসল আবাদ করে কৃষকেরা দাম না পাওয়ায় মৌসুমী সবজি আবাদের দিকে ঝুঁকছে। এতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন এবং ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন