ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র প্রভাবে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের পাকা-আধা পাকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অতিমাত্রায় বৃষ্টির কারণে জমিতেই ভাসছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি ধান। আবার এই বৃষ্টির পানিতে শতশত হেক্টর জমির পাকা ধান তলিয়ে পচে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ৯০০ টাকা দিন মজুরিতেও মিলছে না শ্রমিক। ফলে চোখে-মুুখে হতাশা আর চরম দুশ্চিন্তায় পড়তে হচ্ছে কৃৃষকদের।
গত ১২ মে দুপুরে সরেজমিনে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া ধোপা চড়া বিল, বিল চাপড়া বিল, চর নিকলা বিল, খড়ক বিল ঘুরে দেখা যায়, হাঁটু পানিতে নেমে ধান কাটছে কৃষকরা আবার কেউ কাটা ধান নৌকাযোগে উঁচু স্থানে তুলছে, আবার কেউ কাটা ধানগুলো পানিতে ভাসমান অবস্থায় ছড়িয়ে থাকা একত্রে করছে আবার কেউ কেউ ধান মাড়াই করছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধান পানিতে ন্যুয়ে পড়ায় চারাও গজিয়েছে। বৃষ্টির কারণে বাড়ির উঠুনেও কাঁদা হয়। সড়কেও ধান শুকাতে পারছেন না তারা।
কৃৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর ১ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। তারমধ্যে ধানের চারা রোপন খরচ, ট্রাক্টর হাল চাষ খরচ, সার-কীটনাশক খরচ। এখন ধান কাটার মৌসুম। এই সময়ে প্রতিটি শ্রমিকের মজুরি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। স্বাভাবিক ছয়জন শ্রমিকে ১ বিঘার জমির ধান কাটতে পারলে পানি থাকায় ডাবল শ্রমিক লাগছে। এতে করে বর্তমান সময়ে ১ বিঘার জন্য শুধু কাটতেই খরচ হচ্ছে ৯ থেকে সাড়ে ১০ হাজার টাকা।
উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, ‘পাকা ধান পানির নিচে হাবুডুবু খাচ্ছে। ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। গত ২ দিনের বৃষ্টির পানিতে ধান তলিয়ে গেছে। শ্রমিক না পাওয়ায় চরম ভোগােিন্ত পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া একজন শ্রমিক দিনে ১ মণ ধান কাটতেও পারে না পানির কারণে। এমন অবস্থায় ১ মণ ধানে ১ জন শ্রমিক নিয়েও বিপাকে। কিন্তু অনেকটা বাধ্য হয়ে দ্রুত ধান কাটার জন্য সিরিয়াল দিয়ে শ্রমিক নিতে হচ্ছে।’
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ড. হুমায়ূন কবীর বলেন, উপজেলায় ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকি ধান কাটার অপেক্ষায় ছিল। তবে ২ দিনের বৃষ্টি আর অশনির প্রভাবে কিছু ধান শুয়ে পড়েছে। তারপরও ধান কাটা অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হওয়ার পাশাপাশি কৃষকরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে যদি ধান কাটতে পারে, তাহলে আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন