ঝিনাইদহে সদর পৌরসভা আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ভোটের পরিবেশ। তফশীল ঘোষনা ও দলীয় প্রতিক ঘোষনার পর প্রার্থীর সমর্থকদের উপর হামলা, ভাংচুর ও পিটিয়ে জখমের ঘটনায় এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় আওয়ামীলীগের এক মিছিল থেকে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন জন আহত। এসময় একটি গাড়ী এবং প্রার্থীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়েছে। এর কিছু সময় আগে শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে মনিরুজ্জামান আসলাম ও মাহাফুজুর রহমান ইপিআর নামের দু-জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। রোববার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় পৌরবাসির মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে শহরে একটি প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে আবু শাহিয়ার জাহেদী পিপুল সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে আমাদের শতবর্ষী বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। মেয়র প্রার্থী হতে যাওয়ার কারনে আমার ছোট ভাইয়ের অর্থাৎ জাহেদী ফাউন্ডশনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়েছে। বার বার যদি আমাদের উপর, বাড়ি ঘরে হামলা হয় তাহলে কঠোর ভাবে এর প্রতিরোধ করা হবে। এর আগে সকালে ৭ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ২০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে।
দির্ঘ ১২ বছর পর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্বাচন কমিশন থেকে তফশীল ঘোষনা করা হয়েছে। আগামী ১৫ জুন তারিখে ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ৮১ হাজার ৮শ’ ৪২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভায় নির্বাচিত হয়ে এক মেয়াদে দির্ঘ ১১ বছর দ্বায়িত্ব পালন করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু। সর্বশেষ ২০১১ সালের ১৩ মার্চ এ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালের এপ্রিলে মেয়াদ শেষ হলেও মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় নির্বাচন হয়নি। দির্ঘ ১১ বছর পর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে এক আদেশে ২০২১ সালে ২৪ নভেম্বর পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। সম্প্রতি এ পৌরসভার নির্বাচনী তফশীল ঘোষানার পর পৌরবাসির মধ্যে ভোটের উৎসব শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় চিন্তার ভাজ পড়েছে প্রশাসনসহ পৌরবাসির কপালে।
ঝিনাইদহ সদর থানার উপ-পরিদর্শক কাজী সাহিদুজ্জামান জানান, মিছিলের পরপরই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া তেমন কিছু হয়নি।
শহরের কিংশুক বিপনীর কর্মচারী খালেক রহমান জানান, আমরা দোকানে বেচা কেনা করছিলাম। হঠাৎ একটি মিছিল থেকে কিছু লোক অতর্কিত এসে দোকানে ভাংচুর করে। সেসময় আমরা নিজেদের রক্ষার জন্য ছোটাছুটি করতে থাকি। তবে যারা হামলা করেছে তাদেরকে আমরা চিনতে পারিনি।
এ ব্যাপারে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আব্দুল খালেকের ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন দেওয়া হলে ভাগ্নে পরিচয়ে একজন রিসিভ করে জানান, সে এখন জেলা আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে মিটিংয়ে আছে।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, এই ভাংচুরের ঘটনায় ভুক্তভোগী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজলের পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবার সকালে ৭ জনের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত আরো ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন