বরগুনার তালতলী উপজেলার বড়বগী ও ছোটবগী ইউনিয়নের ছাতনপাড়া ও ঠংপাড়া সংযোগ সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ১০ গ্রামের জনসাধারণের উপজেলা শহরের যোগাযোগ চরম দুর্ভোগে পরিনত হয়েছে। ভাঙা সেতু দিয়ে চলাচলে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য পথচারী ইতোমধ্যেই জখম হয়েছে। ছাতনপাড়া ও ঠংপাড়া সংযোগ সেতুটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের দাবিতে ইতোমধ্যেই করা হয়েছে মানববন্ধন। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি নির্মাণে বা সংস্কারে সংশ্লিষ্টদের দৃশ্যতো তো তৎপরতা নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনুমানিক ২৫ বছর আগে বরগুনা জেলা পরিষদ থেকে তালতলী উপজেলার বড়বগী ও ছোটবগী ইউনিয়নের ছাতনপাড়া ও ঠংপাড়া সংযোগ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের বছর দশেকের ভেতরেই সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এরপর থেকে আর কোনো সংস্কার হয়নি। এই সেতু দিয়ে তালতলী উপজেলা শহর, উপজেলার ১০টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার গ্রামবাসীর চলাচল করে। একই পথে যাতায়াত তালতলী সরকারি কলেজ ও ছাতনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীদের। সেতুটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় লোহার এঙ্গেলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয়রা বিভিন্ন দপ্তরের আবেদন করেও সংস্কার বা নতুন সেতু না হওয়ায় গ্রাম থেকে চাঁদা তুলে বারবার সংস্কার করে চলাচল করেন এলাকাবাসী।
সম্প্রতি ছাতনপাড়া ও ঠংপাড়া সংযোগ সেতুটি ভেঙে নীরামনি নামের তালতলী সরকারি কলেজের একাদশ
শ্রেণীর শিক্ষার্থী গুরতর আহত হয়েছে। এতে ঐ শিক্ষার্থীর মুখের ৪টি দাঁত পড়ে যাওয়াসহ ও শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে গেছে। চলাচলে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় নতুন সেতু নির্মাণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। এরকম আহতের সংখ্যা অসংখ্য।
সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় জনসাধারণ ও শিক্ষর্থীদের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ব্যাহত হচ্ছে তাদের যাতায়াত।
তালতলী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান নাজনীন বলেন, এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে আমরা প্রতিনিয়তই কলেজে যাতায়াত করি। আমাদের এক সহপাঠী এই সেতুটি ভেঙে পড়ে গুরতর আহত হয়েছে। আমাদের একটাই দাবি এই সেতুটি নতুনভাবে নির্মিত হোক। আমরা কলেজে শিক্ষার্থী ছাড়াও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য এই সেতুটিই একমাত্র মাধ্যম।
ঠংপাড়া গ্রামের আবদুল মালেক বলেন, সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুই পাড়ের ছেলে মেয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে পারছে না। এতে তাদের লেখা পড়ার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। তারা দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি করেন। এছাড়াও সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুই গ্রামের মধ্যে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আমাদের জরুরি প্রয়োজনের কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।
তালতলী কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান বলেন, সেদিন কলেজের শিক্ষার্থীসহ সেতুটি ভেঙে পড়ে। ঔ শিক্ষার্থীকে চিকিৎসায় পাঠিয়ে দ্রুত সেতুটি সংস্কার বা পুনঃনির্মানের জন্য আমরা তাৎক্ষণিক মানববন্ধন করি। এখানে দ্রুত নতুন একটি সেতু না দিলে কলেজের অনেক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, এই সেতুটির বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন করেও কোনো সমাধান মেলেনি।
তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মদ আলী বলেন, এই সেতুটি অনেক আগে নির্মাণ করা হয়েছে। এটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এই সেতুটির বিষয়ে মাসিক মিটিং উত্থাপন করা হয়েছে। নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। তিনি আরও বলেন, বিকল্পভাবে চলাচলের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন