ভারত কর্তৃক অবৈধভাবে অধিকৃত কাশ্মীরে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মুসলমানদের উপর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা ও বিচারের নামে তাদের উপর দমন পীড়ন প্রকাশ পায়। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী অধিকৃত অঞ্চলে কাশ্মীরিদের উপর তাদের নিপীড়নকে স¤প্রতি আরও বাড়িয়ে দেয়। -ট্রিবিউন ডট কম। বিচারের নামে সেখানে নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে। ইয়াসিন মালিকের বিচার মামলা হচ্ছে একটি উদাহরণ। জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এই বিতর্কিত এবং বানোয়াট বিচারের মাধ্যমে রাষ্ট্র যেন জাহান্নামের সমস্ত বৈশিষ্ট্য ধারণ করছে। ইয়াসিন মালিক বছরের পর বছর ধরে গ্রেপ্তার, হয়রানি এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাবাহিনীর ভয়ভীতির সম্মুখীন হয়েছেন। ভারতীয় আদালত তার বিরুদ্ধে যে মামলার বিচার করছে, ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, এটি পক্ষপাতদুষ্ট এবং এখানে ন্যায্যবিচার পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যে কোনো মামলা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হওয়ার জন্য অভিযুক্তের একটি ন্যায্য শুনানি হওয়া অপরিহার্য । অথচ এমন কিছু সেখানে অত্যন্ত অসম্ভাব্য। যদি অভিযুক্ত একজন প্রতিরোধের নেতা হয় এবং যে ক্ষমতার বিরুদ্ধে তিনি প্রতিরোধ করছেন আদালত তার হাতে থাকে, ঠিক তেমনি তার বিরুদ্ধে রায় দিচ্ছে আদালত। এখন তিন বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেছে, মালিককে আটক করা হয়েছে। সেই সময়কালেও তাকে বন্দীদের অধিকার দেয়া হয়নি।তার প্রতি ন্যায়বিচার না করে একটি অসম যুদ্ধে শত্রু যোদ্ধা হিসাবে তার প্রতি আরও বেশি খারাপ আচরণ করা হয়েছে। মামলাটি এখন পাঁচবছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে এবং ভারত সরকার আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য এমনভাবে বিচার পরিচালনা করবে বলে মনে হচ্ছে না। দোষী সাব্যস্ত করার জন্য বিজেপি সরকার মালিকের উপর যে চাপ দিচ্ছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়; এই মামলায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনের কথা বলা হয়েছে, যা কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনকে লক্ষ্য করে বিশেষভাবে তৈরি করা আইনের একটি অংশ। বিজেপি সরকার অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের বিরুদ্ধে একটি অপ্রতিরোধ্য প্রতিহিংসায় লিপ্ত হয়েছে। যদিও বিজেপির হিন্দুত্ব এজেন্ডা ভারতজুড়ে মুসলমানদের টার্গেট করছে, কাশ্মীরে এর তীব্রতা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক এবং বিরক্তিকর। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি সরকার যে চরম স্বৈরাচারী এবং ফ্যাসিবাদী আচরণ করেছে, তা খুবই শোচনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে এবং বিশ্বকে অবশ্যই অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে তার নৃশংসতার বিরুদ্ধে অবিলম্বে নোটিশ নিতে হবে। আগস্ট ২০১৯ এরপর থেকে, যখন ভারত সরকার ভারতীয় সংবিধান দ্বারা প্রদত্ত অধিকৃত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে, তখন থেকে এই অঞ্চলে নৃশংসতা অভ‚তপূর্ব মাত্রায় তীব্র হয়েছে। যদিও পাকিস্তান এবং ওআইসি বিশ্বস¤প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। তবে প্রতিক্রিয়াটি ধীর এবং অপর্যাপ্ত হয়েছে, যার ফলে ভারত জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলেছে। জানা যায়, ভারত কাশ্মীরি মুসলমানদের সাথে যা করছে, তা যুদ্ধাপরাধের সমতুল্য এবং সেরকম আচরণ করা উচিত নয়। ভারত যেহেতু কোনো প্রতিক্রিয়ার জন্য কাশ্মীরিদের দোষারোপ করার চেষ্টা করে, তাই মনে রাখা দরকার যে, এখানে দোষী পক্ষ ভারতই। ট্রিবিউন ডট কম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন