নাটোরের সিংড়ায় চলতি বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছিল ৩৬ হাজার ৩শ’ হেক্টর। অবশেষে টার্গেট সফলভাবে পূরণ হয়েছে। আর প্রতি হেক্টর জমিতে চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪.৭ মেট্রিক টন। নাজিরশাল জাতের অধিকাংশ বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা শেষ হয়ে গেছে। তবে কয়েক দফা ঝড়-বৃষ্টিতে ২৯ ও হাইব্রিড জাতের ধানের জমিতে পানি জমে থাকায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সঙ্কট এবং গুনতে হচ্ছে দ্বিগুন মজুরি।
উপজেলার শেরকোল, লালোর, হাতিয়ানন্দহ. চামারী ইউপিতে ২৯ ও হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের আবাদ বেশী হয়। উপজেলা কৃষি অফিসের দাবি ইতোমধ্যে ৯০-৯৫ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দফা ঝড়-বৃষ্টিতে গুরনই-বারনই, আত্রাই ও গুরনদীর পানি বাড়ছে হু হু করে। গত বছর শ্রমিকদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা বোরো চাষিদের সহায়তা করায় আগে ভাগে ধান কাটা শেষ হয়েছিল। চলতি বছর দেখা দিয়েছে শ্রমিকের সঙ্কট। উপজেলার শেরকোল বাজার এলাকার সবুজ মাহমুদ বলেন, উৎপাদিত বোরো ধানগুলো সফলভাবে কেটে ঘরে তুলতে না পারলে, এই অঞ্চলে দেখা দিতে পারে খাদ্য সঙ্কট। একজন শ্রমিকের মজুরি বাবদ প্রতিদিন গুনতে হয় ১১শ’ টাকা। তাও ঠিকমতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে চকসিংড়া মহল্লার কৃষক আব্দুস সোবাহান, সুকাশ ইউনিয়নের বনকুড়ইল গ্রামের মাওলানা নাজমুল হক, কতুয়াবাড়ি এলাকার কৃষক সাজু আহমেদ এবং আগপাড়া গ্রামের নূরুল ইসলাম বলেন, ধানের জমিতে জমিতে পানি জমে থাকায় শ্রমিকরা ধান কেটে দিতে গড়িমসি করছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে অধিক মজুরিতে শ্রমিক পেয়েছি। বৃষ্টিতে ভিজে অনেকের ধানে চারা বের হয়ে গেছে।
মজুরি বেশি নেওয়ার বিষয়ে শ্রমিকদের দাবি- চাল, ডাল, মাছ ও তেলের বাজার ঊর্ধ্বগতি, যে টাকা পাই, তা দিয়ে সংসার চলে না। চলতি বছর বোরো ধান ফুল থেকে বের হওয়ার সময় ঝড়ে ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়লে পরাগায়নের অভাবে কোন কোন জমিতে ধানের ফলন কম হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, চলতি বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছিল ৩৬ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে। টার্গেট সফলভাবে পূরণ হয়েছে। আর প্রতিহেক্টর জমিতে চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ৭ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ৯০-৯৫ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। আগাম বন্য এলেও কোন প্রভাব পড়বে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন