কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সাথে তিনটি ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র ব্যস্ততম ফুলবাড়ী-বালারহাট সড়কটির সারা অঙ্গে রয়েছে ভেঙে যাওয়ার ক্ষত। সড়কটির বেহাল দশায় চরম ভোগান্তিতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে পাকা সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ছোট-বড় যানবাহন। সামান্য বৃষ্টিতে প্রতিদিনেই রাস্তাটি ভাঙছে আর ঘটছে দুঘর্টনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার প্রশাসনিক কার্যালয়ের সাথে নাওডাঙা, শিমুলবাড়ী ও ফুলবাড়ী ইউনিয়নের যোগাযোগের সড়কটি উপজেলা সদরের তিনকোণা মোড় থেকে নাওডাঙা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার। প্রতিদিন স্কুল-মাদরাসা-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা একমাত্র এই সড়কটি। দীর্ঘদিন থেকে সড়কটি সংস্থার না করায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় শত শত খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে ছয় শতাধিক ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাসহ শত শত ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুঘর্টনা। সড়কটি দ্রুত মেরামত না করলে চলমান বৃষ্টি ও বর্ষায় দুর্ভোগ আরও দ্বিগুণ হবে বলে আশঙ্কা করছেন পথচারীরা।
স্থানীয়রা জানান, ৭ কিলোমিটার সড়কটির কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তে পরিনিত হয়েছে এক থেকে দেড় বছর আগে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে জমে থাকে পানি। গাড়ির চাকা গর্তে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাদাযুক্ত পানি ছিটকে পড়ে পথচারীদের ওপর। এ দুর্ভোগ নিত্যদিনের। এলজিইডি অবগত থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই!
বালারহাটের অটোরিকশা চালক গোলজার হোসেন ও রাজু মিয়া বলেন, ভাঙাচুরা সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ঝঁকি নিয়ে ৫ থেকে ৬ শতাধিক ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ছাড়াও প্রতিদিন শত শত ভ্যান গাড়ি, ট্রলি, লরি, মাইক্রোবাস, ভটভটি, ছোট-বড় ট্রাক, সিএনজি ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে। অনেক সময় সাইড দিতে গিয়ে দুঘর্টনার ঘটনাও ঘটছে। প্রায় দিনেই কোন কোন অটোরিকশা উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের করিমামুদ এলাকার আসাদুজ্জামান ও ইয়াছিন আলী বলেন, অধিকাংশ সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে শত শত গর্ত তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ঠাকুরপাঠ ও ছড়ারপাড় এলাকায় সড়কের বড় বড় গর্ত হওয়ায় চরম দুর্ভোগ ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। তারা আরও জানান, ২০১৭ সালের স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সড়কটির ২০ থেকে ২৫ ফিট ভেঙে গেলে মাটি দিয়ে ভরাট করলেও ঐ অংশে পিস দিয়ে মেরামত করেনি।
ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবেদ আলী জানান, উপজেলার মধ্যে ফুলবাড়ী-বালারহাট রাস্তাটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা রাস্তা। এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার জনগণ চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করে। তাই বর্ষার আগে রাস্তাটি মেরামত করলে জনদুর্ভোগ কমবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজীব জানান, ফুলবাড়ী-বালারহাট যাওয়ার সড়কটি যে বেহালদশা সে ব্যাপারে এলজিইডি অবগত আছে। এরই মধ্যে উপজেলা সদরের জিরো পয়েন্ট থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ ৬৪০৮ টাকা ব্যায়ে ১৫০০ মিটার সড়কটির কাজ চলমান আছে। আশা করছি সামনের ২০২২-২৩ অর্থ বছরের মধ্যেই সড়কটির বাকি অংশের মেরামতের কাজ সমাপ্ত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন