নরসিংদীর বেলাবোতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে খুন করেছেন পাষণ্ড স্বামী গিয়াস উদ্দিন। গত রোববার সকালে উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের ভাবলা গ্রামে দুটি বসত ঘর থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত তিনজন হলেন উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের ভাবলা গ্রামের ঘাতক গিয়াস উদ্দিন শেখের স্ত্রী রাহিমা বেগম (৩৬) এবং তাঁদের দুই সন্তান রাব্বি শেখ (১৩) ও রাকিবা শেখ (৭)। রাহিমা বেগম এলাকায় কাপড় সেলাইয়ের কাজ করতেন। রাব্বি স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্র ও রাকিবা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত।
এলাকাবাসী জানান, গত রোববার সকাল আটটার দিকে স্থানীয় এক নারী ওই বাড়িতে পূর্বে বানাতে দেয়া পোশাক আনতে যান রাহিমা বেগমের বাড়িতে। ঘরের দরজা বন্ধ দেখে বেশ কয়েকবার নাম ধরে ডাকাডাকি করেন তিনি। কিন্তু কারও কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে কৌতূহল বশতঃ দরজার নিচ দিয়ে ঘরের ভেতরে তাকান তিনি। এ সময় তিনি ঘরের মেঝেতে রক্ত দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে ওই ঘরের একটি জানালা ভেঙে ঘরের ভেতর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর বেলাবো থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে দেখা যায়, পশ্চিম পাশের মাটির ঘরের মেঝেতে গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ। তার কপাল ও পেটে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দক্ষিণ পাশের মাটির ঘরের খাটে দুই সন্তান রাব্বি ও রাকিবার লাশ। রাব্বিকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ও রাকিবাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে।
খবর পেয়ে বেলাবো থানার ওসি সাফায়েত হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এর পরপরই খবর পেয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান, পিবিআই নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু হয়। এ সময় দুই ঘরের দরজা খুলে নিহত তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গিয়াস উদ্দিনকে পিবিআই কার্যালয়ে আনা হয়। পরে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে গিয়াস জানান, প্রতিবেশীকে ফাঁসাতেই স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করেছেন।
লাশ তিনটি ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এব্যাপারে বেলাবো থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন