গ্রাহক ভোগান্তি কমাতে বিভিন্ন অনলাইন সেবা চালু করেছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তবে অনলাইনে বিভিন্ন ফি জমা দিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রহকরা। এছাড়াও বিআরটিএ’র ওয়েবসাইটেও সঠিক সত্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। এমনকি কার্যাকলগুলোতে তাদের নির্ধরিত বুথে টাকা জমা দিতে গেলও কর্তপক্ষ বলছে সার্ভস ডাউন হয়ে গেছে। এতে গ্রাহকদের ভোগান্তির শেষ নেই।
জানা গেছে, যানবাহনের লাইসেন্স, গাড়ির নম্বরপ্লেট, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য সেবার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি নির্দিষ্ট অনলাইনে জমা দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত ফি জমা দিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজারো গ্রাহক।
এছাড়াও বিআরটিএ সূত্রে জানা যায়, যে কোন ফি পেমেন্ট করার জন্য আবেদনকারীকে বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালে এ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক। যাদের এ্যাকাউন্ট নেই তারা https:ww/w.ipaybrta.cnsbd.com/index/login এই ওয়েবসাইট ভিজিট করে এ্যাকাউন্ট করে নিতে পারবেন। এ্যাকাউন্ট তৈরির পর বিভিন্ন সেবার জন্য অনলাইনে আবেদন এবং ফি পেমেন্ট করা যাবে। আবেদনের জন্য প্রথমে নিচের যে কোন লিঙ্কে গিয়ে ইমেইল/মোবাইল নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে হবে। কিন্তু এই সার্ভিসটি চালু থাকলেও গ্রাহকরা দৃশ্যমান কোনো সেবা পাচ্ছে না।
মুসা নামের এক গ্রাহক ইনকিলাবকে বলেন, গাড়ির অগ্রিম কর প্রদানের জন্য উত্তরা দিয়াবাড়ি শাখায় আজ সকাল সাড়ে ১১টায় যাই। কিন্তু সাড়ে ১২টার দিকে থেকে সার্ভারে সমস্যা রয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। এক পর্যায়ে বিকাল ৪টায় দিকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে গ্রাহকদের আগামীকাল ফের আসতে বলা হয়। সারাদিন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে গ্রাহকরা বাড়ি ফিরে যান।
তবে সূত্র জানায়, করোনা পরবর্তী সময়ে বিআরটিএর কাজের চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে তিন গুণ বেড়ে গেছে। প্রতিদিন শত শত গাড়ি ফিটনেস হালনাগাদ এবং লাইসেন্স নবায়নের জন্য আনা হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দালাল চক্র। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ গ্রাহক। আর ওইসব চক্রের সাথে জড়িত রয়েছেন বিআরটিএ’র কর্মকর্তারাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাহক জানান, দালাল ছাড়া কোনো কাজ করা যায় না। ফাইলের মধ্যে একটি বিশেষ মার্ক থাকে। যা দেখলে বিআরটিএ কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন ফাইলটি কোন দালালের!
মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে মিরপুর বিআরটিএ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ঘরে বসে অনলাইনে টাকা জমা না দিতে পেরে অনেকেই কার্যালয়ে এসেছেন। সেখানে এনআরবি ব্যাংকের কয়েকটি বুথ রয়েছে। ওই বুথগুলোতে টাকা জমা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু দালাল ছাড়া টাকা জমা দিতে গেলেও ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের।
সেবা নিতে আসা আব্দুর রহিম নামের এক ব্যক্তি জানান, বিআরটিএতে এখন পর্যন্ত চারবার এসেছি। একবারও কাঙ্খিত সেবা পাইনি।
তবে এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে বিআরটিএ’র উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক ইনকিলাবকে বলেন, বিআরটিএ’র একটি আইটি শাখা আছে। তবে সেই শাখার দক্ষ জনবল নেই। তাই আউট সোসিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনের কাজগুলো করানো হয়। অনলাইনের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক সময় সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। এছাড়াও টেকনিক্যাল আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তবে ওই সমস্যা বেশি সময় থাকে না। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই সমস্যাগুলো সমাধান করে দেয়া হয় বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন