মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়

গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্ট নাগরিকগণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ না হলে যত ভালো নির্বাচন কমিশনই (ইসি) হোক না কেন তার পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ। তারা বলেন, নির্বাচনকালীন প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের কথা শুনে না। এখন প্রশাসনের অবস্থা খুবই খারাপ। আওয়ামী লীগ গত ১৩ বছরে প্রশাসনের সর্বত্র দলীয়করণ করেছে। সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ পদে দলীয় লোকদের বসানো হয়েছে। এখন সরকারি অফিসে গেলে আওয়ামী লীগের কর্মী ছাড়া অফিসার পাওয়া যায় না।

গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি এন্ড ভোটার রাইটস আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বিশিষ্ট নাগরিকগণ এসব কথা বলেন।

দ্য নিউ নেশনের সাবেক এডিটর মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে ও আয়োজন সংগঠনের সেক্রেটারি হুমায়ুন কবির বেপারির সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল লতিফ মাসুম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর শাহআলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। গত দুটি নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ভোটের আগের রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে পরের দিন ওই ব্যালট পেপার গুনে ক্ষমতা দখলের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রমাণ সবার সামনে উঠে এসেছে। এর পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশের মানুষ আর দেখতে চায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ভিসি বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন আজ পুরোপুরি অনুপস্থিত। গুম,খুন, অপহরণ, ক্রসফায়ারের মাধ্যমে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে। বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আজ ভুলুন্ঠিত। বিচারের বাণী আজ নীরবে কাঁদছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সীমাহীন বৃদ্ধির কারণে আজ দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। দেশ থেকে লুটেরা গোষ্ঠী হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে পড়েছে। কেউ যেন দেখার নেই। ধীরে ধীরে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম পাকিস্তানি স্বৈরশাসন থেকে বাচঁতে। আর এখন নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদের কবলে পড়েছি। পাকিস্তানের চেয়েও ভয়াবহ দুঃশাসনের যাঁতাকলে এখন আমরা পিষ্ট হচ্ছি। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দেশের বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবিসহ দেশবাসীকে জেগে উঠার আহবান জানান তিনি।

ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, যে কারণেই হোক, নির্বাচন কমিশন এখন সরকারি প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। এটি এখন আর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নেই। তাদের আনুগত্য সরকারের প্রতি, রাষ্ট্রের প্রতি নয়। তিনি বলেন,২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন কল্পনাও করা যায় না। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করা বর্তমান বাস্তবতায় কোন যৌক্তিকতাই নেই।

মোস্তফা কামাল মজুমদার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার আহবান জানিয়ে বলেন, ইভিএম সব সময় সব দেশে বিতর্কিত। বাংলাদেশের জনগণের মধ্যেও ইভিএম নিয়ে আপত্তি আছে। জনগণ যেটি চায় না সরকার সেটি কার্যকর করতে এত মরিয়া কেন? এটা আজ স্পষ্ট যে যারা ক্ষমতায় থাকে তারা যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে সে নির্বাচন অবাধ হয় না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন