উত্তরাঞ্চলের শিল্প ও বাণিজ্য শহর হিসেবে খ্যাত সৈয়দপুর। এ শহরে সারাদিনে ১০ থেকে ১২ বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে। এতে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন কমেছে বলে শিল্প মালিক ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এছাড়া শহরের এলএসডি গোডাউন এলাকায় বিপজ্জনক ট্রান্সফরমার মাটিতে রাখায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন লোকজন। গত এপ্রিল মাস থেকে সৈয়দপুরে ভয়াবহ বিদ্যুৎ লোডশেডিং এভাবেই চলছে।
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় শিল্প-কারখানায় ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক কারখানায় বৈদ্যুতিক মোটর পুড়ে যাচ্ছে। ফলে গচ্ছা দিতে হচ্ছে শিল্প মালিকদের। ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব পড়েছে দোকান ও মার্কেটগুলোতেও। ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জেনারেটর এবং আইপিএস নির্ভর হয়ে পড়েছে। এতে করে বাড়ছে ব্যয়।
গতকাল সোমবার সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরির খলিল মেজর আটা, বোর্ড পেপার ও বস্তা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, গত এপ্রিল মাস থেকে এই অঞ্চলে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট চলছে। দিনে কমপক্ষে ১১/১২ বার বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে। ফলে মিলের মেশিন চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এতে করে উৎপাদন কমেছে প্রায় ৬০ ভাগ। গত এক মাসে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মিলের অনেক মেশিন নষ্ট হয়েছে এমন অভিযোগ বিসিকের অনেক ব্যবসায়ীর।
শহরের সৈয়দপুর প্লাজায় কম্পিউটার ও ফটোকপি দোকান ঘুড়ে দেখা যায়, প্রায় অধিকাংশ দোকানের কম্পিউটারের পাওয়ার সাপ্লাই পুড়ে গেছে। ওই ব্যবসায়ীরা জানান, সবখানে শুনছি বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ আমরা। কিন্ত সৈয়দপুরে ভিন্ন চিত্র। কেন ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা উচিত।
নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) সৈয়দপুর বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় কেন্দ্র সূত্র জানায়, শিল্প-বাণিজ্য নির্ভর শহর সৈয়দপুরে প্রতিদিন ৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। সরবরাহ মিলছে একই পরিমাণ বিদ্যুৎ। দৈব দুর্বিপাকে ২/১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম মিললেও লোড ম্যানেজমেন্টে কোনো সমস্যা নেই আমাদের।
নেসকো সূত্র জানায়, সৈয়দপুরে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৪৬ হাজার ৩৬৯টি। এরমধ্যে আবাসিক ৩৯ হাজার ২৯৫টি, শিল্প ৬৭৯টি, সেচ ৮২২টি, অনাবাসিক ৪০৫টি, অটোচার্জার পয়েন্ট ৮৩টি, বাণিজ্যিক চার হাজার ৮৬৪টি। এছাড়া এএইচটি সংযোগের জন্য ৭০ জন গ্রাহক রয়েছেন।
নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) সৈয়দপুর বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া জানান, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে সামান্যতম ব্যাঘাত ঘটলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঝড়ো বাতাসে বিদ্যুতের তারের ওপর গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ার আশংকা থাকে। এজন্য আমরা নিরাপত্তার জন্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ করে থাকি। এখন দুর্যোগ নেই তবুও বিদ্যুৎ বিভ্রাট কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন