শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

আ.লীগকে হটাতে রাজপথে আন্দোলন গড়তে একমত বিএনপি-বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০২২, ৬:০৯ পিএম

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে রাজপথে আন্দোলন গড়তে একমত হয়েছে বিএনপি-বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। বুধবার নিজেদের সংলাপের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধাণ সম্পাদক সাইফুল হক।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এখন আমরা যারা একমত হচ্ছি তারা আমরা যৌথভাবেই আন্দোলন শুরু করব এবং নিজের নিজের জায়গা থেকে আন্দোলন শুরু করবো। আন্দোলন যুগপৎ হবে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ধারা নির্ধারিত হবে যে শেষ পর্যন্ত সেটা কিভাবে রুপ নিচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা রাজনৈতিকগুলো একজোট হয়ে কাজ করলে আমরা অবশ্যই এই দুঃশাসনকে পরাজিত করে জনগণের বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হবো।

তিনি বলেন, মানুষ দেখতে চায় যে, আজকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আছে, এই দুঃশাসন থেকে রেহাই পাবার জন্য বিরোধীদলগুলোকে জনগনের পক্ষে একটা কার্যকর-সমন্বিতভাবে যুগপৎ ধারায় মাঠের একটা কার্যকর ঐক্য দেখতে চায়।

আলোচনায় বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি যুগপৎ ধারায় আন্দোলনের ব্যাপারে মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে সাইফুল হক বলেন, ভবিষ্যতে এটাকে আমরা আরো জোরদার করবো এবং আন্দোলনের কাজটাকে আমরা আরো সমন্বিত করবো।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, গণআন্দোলন ও গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে যদি পদত্যাগে বাধ্য করা না যায় তাহলে মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, তদারকির সরকার, অবাধ গ্রহনযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন অথবা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত কোনটাই বাংলাদেশে নিশ্চিত করা যাবে না। সেই কারণের জন্য আমরা আলাপ-আলোচনা করে আন্দোলনে ঐক্যমত হয়েছি।

সাইফুল হক বলেন, আজকে বিরোধীদলগুলো যে উদ্যোগ নিয়েছে মানুষ তার নিজ নিজ জায়গা থেকে এই উদ্যোগের পাশে দাঁড়াবেন এবং তারা আন্দোলনের সাথী হবেন। যুগপৎ আন্দোলন অর্থ বিএনপি-বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করবে না, তবে একই লক্ষ্য অর্জনে তারা কর্মসূচি আলাদাভাবে পালন করলেও তাতে সমন্বয় থাকবে।

সংবিধান সংস্কার প্রসঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতামত তুলে ধরে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, শুধুমাত্র সরকার পরিবর্তনের জন্য আমাদের এই আন্দোলন নয়। পুরো রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার, পরিবর্তন, একই সাথে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কারসহ এখানে রাষ্ট্র প্রশাসনের গণতান্ত্রিক যে সংস্কার এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্র যেভাবে নাগরিকদের ওপরে একটা সহিংস ভূমিকায় আবির্ভুত হয় এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে যেভাবে দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়-এই জায়গাগুলোর ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। সামগ্রিকভাবে নির্বাহী বিভাগ এখন যেভাবে বিচার বিভাগ বা আইন প্রণয়ন বিভাগসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ওপরে যেভাবে তারা (সরকার) কর্তৃত্ব করে এটা আধুনিক রাষ্ট্রের যে ভারসাম্য তার পরিপন্থি। এই সমস্ত বিষয়ে আমরা গুণগত পরিবর্তন, সাধারণ নির্বাচনের পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের বিষয়েও আমরা আলোচনা করেছি। পুরো রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থার একটা গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রয়োজন। আমরা আলোচনায় সংকট উত্তরণে আমাদের দলের ৩১ দফা বিএনপির নেত্বৃৃন্দের কাছে পেশ করেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, যে সমস্ত সংস্কারের কথাগুলো সাইফুল হক সাহেব বলেছেন, আমরাও সে সমস্ত কথা বলছি, এই সব সংস্কার নিয়ে আরো বিশদ আলোচনা করবো এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারেও যৌথভাবে আমাদের বক্তব্য নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হবো।

আলোচনার জন্য বেলা সোয়া ১টায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছান আলী দুলাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, মাহমুদ হোসেন ও এ্যাপেলো জামালী। সোয়া একটা থেকে পৌনের দুই ঘন্টা এই সংলাপ হয়।

গত ২৪ মে বিএনপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলনের ঐক্য গড়ে এই সংলাপের সিদ্ধান্ত নেয়। ওইদিন তারা নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে এবং ২৭ মে ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের লেবার পার্টির সাথে সংলাপ করেছে বিএনপি। গতকাল করেছে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে সংলাপ করে তারা।###

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন