চাঁদাবাজি ও মারধরের ঘটনায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন শাহানারা বেগম (৬০) নামের এক বিধবা বৃদ্ধ নারী। মামলাগুলো প্রত্যাহারে তাকে গত কয়েক দিন থেকেই অব্যাহত চাপ ও হুমকি দিচ্ছেন অভিযুক্ত মো. মিরাজ (৩৫) ও তার লোকজন। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের পশ্চিম চরপাতা গ্রামের মজুমদার বাড়ির ঘটনা এটি। তবে গতকাল শুক্রবার দুপুরে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। জানা যায়, ওই বাড়ির আব্দুর রব মিয়ার ছেলে মো. মিরাজ। এলাকাবাসীর কাছে মিরাজ এক আতঙ্ক। এলাকায় আ.লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত মেরাজ। গত ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে পরাজিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে হত্যা, চাঁদাবাজি, মারধর, দাঙ্গাহাঙ্গামাসহ বিভিন্ন ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় জিডি ও আদালতে মামলার সংখ্যা অন্তত : ২০টি। গত ৬ মার্চ লক্ষ্মীপুরের মো. ছায়েদ (৩২) নামের এক রাজমিস্ত্রী ওই এলাকায় পাওনা টাকা নিতে আসলে তাকে বেঁধে নির্যাতন করে, গত ১৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় কারাগারে তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের পিতা আবুল কাশেমের মামলায় মিরাজও আসামি।
ওই যুবককে মিরাজসহ অন্যরা মারধর ও বুকে পাড়া দিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে। শাহানারা বেগম (৬০) বলেন, জায়গা-জমি নিয়ে মিরাজ পরিবারের সাথে আমাদের বিরোধ চলছে। এ পর্যন্ত মিরাজ, তার বাবা আব্দুর রব ও তার পক্ষেও লোকজন আমার ওপর প্রায় ৩৫-৪০ বার হামলা চালিয়েছে। মারধরের আঘাত নিয়ে অনেকবার হাসপাতালে গিয়েছি। এ বাড়িতে থাকতে হলে মিরাজকে পাঁচ লাখ টাকা দেয়ার জন্য দাবি জানায়। আমি অপারগতা প্রকাশ করলে আমাকে মারধর করে। আমি মামলা করলে পুলিশের তদন্তেও আমার অভিযোগের সত্যতা মেলে। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
শাহানারা আরো বলেন, ইতোমধ্যে তার অত্যাচারে থানায় ২৫-৩০টি জিডি ও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি। প্রতিটি তদন্তেই প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো শাস্তি না হওয়ায় দিন দিন তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে মামলাগুলো প্রত্যাহারে আমাকে চাপ ও হত্যা করে গুমের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে মো. মিরাজ বলেন, জমি নিয়ে আমাদের দু’পরিবারে বিরোধ ও মামলা চলছে। আমাদেরকে তারা অন্যায়ভাবে হয়রানি করছে। মিথ্যা কথা রটিয়ে সম্মানহানি করে চলেছে। তাদেরকে মারধর ও চাঁদাবাজি এবং হুমকির ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
চরপাতা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সুলতান মামুনুর রশিদ বলেন, মিরাজ আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী। তবে কোনো পদে নেই। নেতা না হলেও চালচলনে নেতা। ওই গৃহবধূর পরিবারের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি আমাকে অনেক আগে জানানো হয়েছিল। তবে ইদানিংকালের কোনো বিষয় অবগত নই।
রায়পুর থানার ওসি শিপন বড়ুয়া বলেন, জমি নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই নারীকে হুমকির বিষয়ে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন