নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথমবারের মতো রাজস্ব তহবিলের ৩ কোটি ৪৬ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা ব্যায়ে অতীব গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রধান সড়কের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সড়ক দু’টির নির্মাণ কাজ শেষ হলে একদিকে দীর্ঘদিনের জনদুর্ভোগ লাঘব হবে, অপরদিকে পৌর নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাদদেশে পাহাড়, নদী আর প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি দুর্গাপুর উপজেলা। এ অঞ্চলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও গারো, হাজংদের বৈচিত্র্যময় জীবনযাত্রা এবং সংস্কৃতি দেখতে প্রতি বছর শত শত পর্যটক এখানে বেড়াতে আসে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এবং দুর্গাপুর উপজেলা শহরের নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৪ সালে এই পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর পৌর নাগরিকরা নিয়মিত পৌর কর পরিশোধ করলেও তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি।
সুমেশ্বরী নদী থেকে শত শত ট্রাক ভেজা বালু পরিবহন করায় সারা বছর পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়কে কাদা পানিতে সয়লাভ থাকতো। ফলে কোমলমতি শিশু-কিশোরসহ পৌর নাগরিক ও বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরা কাদা পানি মাড়িয়ে পথ চলতে হতো। নির্বাচনের পূর্বে আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আলাউদ্দিন নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি যদি জনগনের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন, তাহলে পৌর নাগরিকদের নানাবিদ সমস্যা সমাধান করে দুর্গাপুর পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভায় রুপান্তর করবেন।
বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে শপথ নেওয়ার পর থেকে পৌর মেয়র মো. আলা উদ্দিন একে একে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে শুরু করায় ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে দুর্গাপুর পৌরসভার দৃশ্যপট। নির্বাচিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মেয়র মো. আলা উদ্দিন নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবে পৌরসভার রাজস্ব তহবিলের টাকায় প্রধান প্রধান সড়ক প্রশস্থ করণসহ আর সি সি সড়ক নির্মাণ, পানিবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বক্স কালভার্ট নির্মাণ, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, অন্ধকার দুরীকরণে সড়ক বাতি ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি কল্পে বিভিন্ন মোড়ে আলোকসজ্জ্বার ব্যবস্থা করণ শুরু করেছেন।
পৌর সচিব মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ১ কোটি ৯১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ব্যায়ে নাজিরপুর মোড় থেকে তেরি বাজার পর্যন্ত সড়ক ও ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যায়ে কালিবাড়ী মোড় থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ দু’টি সড়কের নির্মাণ কাজ জোরেশোরে চলছে। আশা করা হচ্ছে, জুলাইয়ের আগেই সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। প্রধান দু’টি সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে পথচারীদের আর কাদাপানি মাড়িয়ে চলতে হবে না।
পৌর মেয়র আলাউদ্দিন বলেন, আমি নির্বাচনের পূর্বে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আগামী ৪ বছর যদি উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে দুর্গাপুর পৌরসভাকে অবশ্যই মডেল পৌরসভায় উন্নীত করতে পারব, ইনশাআল্লাহ্।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন