শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বাদীর বাড়িতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হত্যা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামিরা কলারোয়ায় বাদীর বাড়ি এসে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। গত ৩১ অক্টোবর সাতক্ষীরা সদর থানার কুশখালী গ্রামের মশিয়ার রহমানের স্ত্রী মমতাজ খাতুন (৩২) কে পিটিয়ে হত্যার পরে লাশ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রাখার ঘটনায় আদালতে মামলা করায় আসামিরা কলারোয়ায় বাদীর বাড়ি মুরারিকাটি এসে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। জানা গেছে, ১৪/১৫ বছর আগে কলারোয়া উপজেলার মুরারিকাটি গ্রামের সুরত আলীর কন্যা মমতাজের সঙ্গে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী গ্রামের জমির আলীর পুত্র মশিয়ারের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে মমতাজ জানতে পারে তার স্বামীর সৌদি প্রবাসী সহোদর মেজ ভাইয়ের স্ত্রী লতা খাতুনের সঙ্গে তার স্বামী মশিয়ারের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। অবৈধ সম্পর্ককে লোকচক্ষুর আড়াল রাখতে মমতাজকে বিয়ে করা হয়েছে। মমতাজ এই অবৈধ সম্পর্কে বাধ সাধলে তার ওপর নেমে আসে দিনের পর দিন অমানুষিক নির্যাতন। ইতোমধ্যে মমতাজের গর্ভে দুটি সন্তান জন্ম নেয়। তাই সন্তানের কথা বিবেচনা করে স্বামীকে ভালো পথে ফিরিয়ে আনতে মমতাজ বাপ-ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা এনে স্বামী মশিয়ারকে মালয়েশিয়ায় পাঠায়। কিন্তু বিধি বাম। তাই লম্পট স্বামী মশিয়ার প্রবাস জীবনে মালয়েশিয়ান এক মেয়ের সঙ্গে আবার অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে মালয়েশিয়ান সেই মেয়ে বিয়ে করে মশিয়ার সেখানে ঘর সংসার করেছে। এদিকে এই মালয়েশিয়ান স্ত্রী নিয়ে দেশে ফেরার বাধা হয়ে দাঁড়ায় মমতাজ। বিনা অনুমতিতে বিয়ে করার জন্য দেশে ফিরলে মামলা করার হুমকি দেয় মমতাজ। এতে প্রায় দুই বছর যাবৎ কোনো সংসার খরচ না দিয়ে মমতাজকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করা হয়। আর মমতাজ বাপের বাড়ির টাকায় পাঠানো স্বামীর মালয়েশিয়ায় বিয়ে করা মেনে নিতে অস্বীকার করে। এতে স্বামী মশিয়ার মমতাজের ওপর চরম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এই সুযোগে মেজ ভাইয়ের স্ত্রী লতা খাতুন তার প্রেমিকা মশিয়ারকে বিদেশে পাঠানোর প্রতিশোধ নিতে তৎপর হয়। তাই মশিয়ারের টাকায় এবং লতার কূট চালে পরিবারের সকলের কাছে চরম শত্রু হয়ে ওঠে মমতাজ খাতুন। এ অবস্থায় হত্যাকা-ের ৪/৫ দিন আগেও পরিবারের সকলে একযোগে মমতাজকে বেধড়ক মারপিট করে। ঘটনার দিন ৩১ অক্টোবর মৃত্যুর খবর পেয়ে মমতাজের মা গিয়ে দেখে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছে মমতাজের লাশ। তারপরও প্রভাবশালী আসামি পক্ষের চাপের মুখে তাদের নিশ্চুপ থাকতে বাধ্য করে লাশ দাফন করা হয়। পরে মমতাজের বোন কলারোয়ার মুরারিকাটি গ্রামের রাশিদা খাতুন বাদী হয়ে গত ৯ নভেম্বর সাতক্ষীরা আমলি আদালত-১ মামলা নং সিআরপি-৪৭৩/১৬ করেন। আদালত মামলা নথিভুক্ত করে পুলিশকে তিন দিনের মধ্যে এ বিষযে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলার কথা জানতে পেরে আসামি পক্ষ কুশখালী গ্রামের মেম্বারকে নিয়ে কলারোয়ার মুরারিকাটি বাদীর বাড়ি এসে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে বাদী রাশিদা খাতুন এসে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান।    

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন