পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, তার মন্ত্রণালয় বর্তমানে নবগঠিত ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রস্পারিটি (আইপিইএফ)-এ যোগদান করা বাংলাদেশের জন্য উপকারী হবে কিনা তা নিরূপণ করতে এর বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে।
নতুন এ অর্থনৈতিক কাঠামো বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার অফিসে মিডিয়াকে বলেন, ‘আমরা এটি (আইপিইএফ) নিয়ে পর্যালোচনা করছি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২৩ মে টোকিওতে অন্য ১২টি দেশের সাথে আইপিইএফ চালু করেন। দেশগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। এসব দেশ একসাথে র বিশ্ব জিডিপির ৪০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে আইপিইএফ-এ অন্যান্য দেশের যোগদানের সুযোগ থাকবে এবং ওয়াশিংটন আশা করে যে বাংলাদেশ এটি নিবিড়ভাবে অনুসরণ করবে।
আইপিইএফ-এর বিষয়ে চীনের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা আইপিইএফ-এ যোগ দেবে কি না, সে বিষয়ে বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষণ থাকতে পারে, ‘তবে আমরা শুধু তা-ই করব যা আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নতির সঙ্গে কখনই আপস করেন না, পদ্মাসেতু জাতীয় স্বার্থে তার দৃঢ় অবস্থানের একটি বড় উদাহরণ।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, আমরা খুব খুশি যে আমাদের খুব শক্তিশালী নেতৃত্ব রয়েছে, আমরা আমাদের দেশের ভালোর জন্য যা করা সম্ভব তা করব।
ড. মোমেন বলেন, ‘তবে, আমরা অন্যদের পরামর্শও শুনব, শুনতে তো ক্ষতি নেই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইপিইএফ চারটি স্তম্ভের ওপর জোর দিয়েছে- সাপ্লাই চেইন স্থিতিস্থাপকতা, তথ্য ব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অবাধ ও ন্যায্য বাণিজ্য।
তিনি বলেন, অবাধ বাণিজ্যের জন্য ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় সাপ্লাই চেইন এবং ইনক্লুসিভ ও ওপেন নেভিগেশনের বিষয়ে ঢাকার কোনো পর্যবেক্ষণ নেই। ‘(আইপিইএফের মতো), আমরাও চাই যে সরবরাহ শৃঙ্খলে কোনও ব্যাঘাত না ঘটুক, তাই আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই,’ তিনি বলেছিলেন।
পাশাপাশি মন্ত্রী বলেন, স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের ধারণা ঢাকার নীতির সাথে মিলে যায় কারণ বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত এই অঞ্চলে অবাধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নিরাপদ নৌচলাচল দেখতে চায়।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু, আমাদের নীতিগুলো ছাড়া (আইপিইএফ)-এ আর কী আছে তা আমার জানা নেই।’
মন্ত্রী বলেন, এটা একটা ভালো লক্ষণ যে আইপিইএফ মানি লন্ডারিং ইস্যুতে জোর দিতে চায় কারণ পশ্চিমা দেশগুলোর বেশিরভাগ ব্যাংক তাদের গোপনীয়তা আইনের কারণে বিদেশি নাগরিকদের অ্যাকাউন্টের তথ্য প্রকাশ করে না।
তিনি যোগ করেন, ‘এটি ভালো খবর, যেহেতু আমরা কাউকে অবৈধভাবে দেশ থেকে অর্থ স্থানান্তরের অনুমতি দিই না... তাই আমাদের এটি দেখতে হবে।’
ডেটা ম্যানেজমেন্ট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ের আওতায় কী আছে তা ঢাকাকে বের করতে হবে।
সম্প্রতি, বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম মার্চ মাসে দ্বিপক্ষীয় সংলাপে ব্যক্তিগতভাবে তথ্য শেয়ার করে আইপিইএফ সম্পর্কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে পরামর্শ শুরু করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন