মোঘল আমলের নিদর্শন কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ। মোঘল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে জমিদার শাহ সুফি আহমদ আলী ওরফে আদারী মিয়া মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এই মসজিদের ইমাম নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মসজিদটি কুষ্টিয়া শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে সদর উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত। যা দেখতে প্রতিদিনই শত শত দর্শনার্থীর আগমন ঘটে এখানেই। ভ্রমণপিপাসুদের আগমনেও মুখরিত হয়ে ওঠে স্থানটি।
মসজিদের ইমাম-কাম-খতিব আবুল খায়ের মো. মোকারম হোসেন তিন বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি মানববেতর জীবন করছেন। বিষয়টি বার বার মসজিদ কমিটির লোকজনের কাছে জানিয়ে প্রতিকার না পেয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্রের মাধ্যমে তিনি ঝাউদিয়া শাহী মসজিদে যোগদান করেন। ফলে নিয়োগপত্রের শর্তাবলী মোতাবেক বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা পাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালের মে মাসে তিনি ওমরা পালনে সৌদি যান। ফিরে এসে দেখেন অন্য একজনকে খতিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ওমরায় যাওয়ার পর থেকেই তার বেতন বন্ধ করে দেন মসজিদ কমিটি। কি কারণে তার বেতন বন্ধ রয়েছে সে বিষয়ে মসজিদ কমিটির লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা কিছুই বলেননি। উপায় না পেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন ইমাম মোকারম হোসেন।
ইমাম মোকারম হোসেন জানান, সৌদি যাওয়ায় ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত বকেয়া ৩৫ মাসের বেতন ভাতা ও ৩ বছরের ৬টি উৎসব ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
প্রতিকার চেয়ে তাই জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করছি। দীর্ঘদিন বেতন ভাতা না পাওয়ায় পরিবারের মানুষ গুলোকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।
এ বিষয়ে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ কমিটির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস বলেন, যেহেতু এটি অনেক আগের বিষয়। বিষয়টি আমার জানা নেই। তাই না জেনে মন্তব্য করাও ঠিক হবে না।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন