শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

২০ ট্রলার বোঝাই রোহিঙ্গা নাফ নদীতে ভাসছে

নৌকা ডুবে ১০ জন নিখোঁজ : লাশ উদ্ধার

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৩ এএম, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সময় টেকনাফ সীমান্তের কাছাকাছি বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে ঢুকার চেষ্টাকালে বিজিবির সতর্কতার কারণে নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী-শিশুসহ ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার রাতে টেকনাফের জাদিমুড়া সীমান্ত বরাবর নাফ নদীর মাঝখানে নৌকাডুবির এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে জাদিমুড়া এলাকার একটি ট্রলার নদীতে ভাসমান অবস্থায় ২০ জনের মতো রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে উদ্ধার করে। তবে নৌকায় থাকা শিশুসহ ১০ জন এখনো নিখোঁজ।
নৌকডুবির এ ঘটনায় রোকেয়া বেগম নামে এক নারী বেঁচে গেলেও তার তিন সন্তান নিখোঁজ রয়েছে। সন্তানদের হারিয়ে রোকেয়া ও তার স্বামী হুমায়ুন কবির পাগলপ্রায়। হ্নীলা সিকদারপাড়া এলাকায় উদ্ধার হওয়া এ দম্পতির সাথে কথা বলে জানা গেছে, রোববার রাতে মিয়ানমারের মংডু রাইম্যাবিল এলাকার কয়েকশ’ নারী-পুরুষ কয়েকটি নৌকায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসছিল। এ সময় তাদের নৌকাটিতে নারী-শিশুসহ প্রায় ৩০ জনের মতো ছিল। নৌকাটি সীমান্তের কাছাকাছি এলে বিজিবির স্টিমার দেখে পালানোর চেষ্টায় করলে সেটি নদীতে ডুবে যায়। এ সময় তাদের সাথে থাকা কয়েকটি পরিবারের সাত শিশু নদীতে ভেসে যায়। এদের মধ্যে হুমায়ুন কবির ও রোকেয়ার তিন সন্তান রয়েছে। আনোয়ার ইব্রাহিম (৮), আফসান বিবি (৫) ও ইমরান (৩) নামে তিন সন্তান হারিয়েছেন এই দম্পতি। অপর দিকে, সোমবার রাতে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ সদরের নাজিরপাড়ার নাফ নদীর কিনারা থেকে ২৫ বছরের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে। টেকনাফ মডেল থানার ওসি আবদুল মজিদ ধারণা করছেন, লাশটি মিয়ানমারের সহিংসতার ঘটনায় নিহত হতে পারে।
এ ছাড়া সোমবার ভোর রাত থেকে ২০ ট্রলার বোঝাই রোহিঙ্গা মুসলিম নদীতে ও সাগরে ভাসমান অবস্থায় দেখা গেছে জানিয়েছেন স্থানীয় জেলে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার নুরুল আমিন ও সীমান্তের কাছাকাছি লোকজন। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নৌকাগুলো বিজিবি ও কোস্টগার্ডের স্টিমারে থাকা সদস্যরা তাদেরকে ফেরত ও প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তার গণহত্যার ভয়ে তারা মিয়ানমারেও যেতে চান না।
তারা টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির সতর্কতার কারণে ঢুকতে না পারায় বর্তমানে ভাসমান অবস্থায় রয়েছেন।
মিয়ানমারের আরাকানে মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামের পর গ্রামে আগুন জ্বলছে। গত কয়েক সপ্তাহে হাজার হাজার মুসলমান মারা গেছে। ২০ ট্রলার বোঝাই দেড় সহস্রাধিক মুসলমান বেশ কয়েকদিন ধরে সাগরে ভাসছেন। তাদের মানবিক বিপর্যয়ে কেউ এগিয়ে আসছে না।
এ বিষয়ে টেকনাফের নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা আব্দুল হাফিজ বলেন, আমরা আমাদের অবস্থা সম্পর্কে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মিয়ানমার সরকার বিশেষ করে সুচির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সুচি এখনো আমাদের জন্য কোনো কিছু করেনি এবং কিছু বলেনি। অথচ ১৯৯০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গারা এমনকি আমার বাবা-মা তার পক্ষে নির্বাচনী অভিযানে অংশ নিয়েছেন। তবু অন্য সব বার্মিজ বৌদ্ধদের মতো তিনিও রোহিঙ্গাদের অধিকার সম্পর্কে নিশ্চুপ রয়েছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসির এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কাজ করছে বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিজিবি স্থল সীমান্তে পাহারা জোরদারের পাশাপাশি নাফ নদীতেও স্পিডবোট নিয়ে টহল দিচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Alamgir ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৫৭ এএম says : 0
রোহিঙ্গা মুসলিম নিধন বন্ধে শান্তিকামী বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে
Total Reply(0)
খালিদ ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৫৮ এএম says : 0
মানবিক দিক বিবেচনায় তাদেরকে আমাদের আশ্রয় দেয়া উচিত।
Total Reply(0)
Md Delwar Sikder ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৩৯ পিএম says : 0
হে আল্লাহ্, এই মজলুম মুসলিমদের চোখের পানি আপনি কবুল করুন । তাদের ফরিয়াদ একটাই বার্মার বৌদ্ধ জালিমদের জুলুম নির্যাতন থেকে তাদের কে মুক্তি দিন । (আমিন)
Total Reply(0)
Sayed Moynul ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৪০ পিএম says : 0
Saying from my end to world leaders - pls immediately take a peaceful action against this types of genocide. And - Help the muslims of Myanmar.
Total Reply(0)
Siam Mahamud ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৪১ পিএম says : 0
অাল্লাহ অাপনি জুলুমবাজদের জুলুম থেকে অামাদের মুসলমান ভাই, বোন, মাকে হেফাজত করেন
Total Reply(0)
Md Mitho ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৪২ পিএম says : 0
Allah tome hafajot koro Amin...
Total Reply(0)
shariful islam ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ৮:২২ এএম says : 2
বাংলাদেশ সরকার মুসলীম সরকার হিসাবে হয় সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে মুসলীম দের রক্ষা করবে নতুবা সিমান্ত খুলে দেবে।আমরা সাধারন জনগন তাদের খাওয়া পরার দায়িত্ব নিব।
Total Reply(1)
63006 ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ৬:৫৮ পিএম says : 4

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন