প্রতিবেশী দেশ ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে রাজ্য দুটির বহু জায়গায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। এতে এ পর্যন্ত ৩১ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আসামের ২৮টি জেলার অন্তত ১৯ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং নবগঠিত বাজালি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া ইতিমধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত আশেপাশের অনেক গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান, ব্রহ্মপুত্র ও গৌরাঙ্গ নদীর পানি অনেক এলাকায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আসামে গত দুই দিনে বন্যায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মেঘালয় প্রশাসন গত ২ দিনে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোর প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে- জরুরি প্রয়োজন না হলে বা কোনো জরুরি চিকিৎসাজনিত প্রয়োজন না হলে মানুষকে বাড়ির বাইরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া বন্যায় প্রায় তিন হাজার গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
টানা ৩ দিন থেকে আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে অবিরাম বৃষ্টিপাত চলছে। ইতিমধ্যে জলাবদ্ধতার কারণে আসামের রাজধানী গুয়াহাটির বেশির ভাগ অংশ স্থবির হয়ে পড়েছে। গুয়াহাটি শহরেও বেশ কয়েকটি ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে এবং নুনমতি এলাকার অজন্তানগরে তিনজন আহত হয়েছে। বক্সা জেলায় অবিরাম বর্ষণ এবং দিহিং নদীর পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বুধবার সুবনখাটা এলাকায় সেতুর একটি অংশ ধসে পড়েছে।
একজন কর্মকর্তা জানান, আসামের নিম্নাঞ্চল রাঙ্গিয়া বিভাগের নলবাড়ি এবং ঘোগরাপারের মধ্যে রেললাইনে জলাবদ্ধতার কারণে কমপক্ষে ছয়টি ট্রেন বাতিল এবং চারটি আংশিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক টুইটার পোস্টে বলেন, বলিউড অভিনেতা অর্জুন কাপুর ও পরিচালক রোহিত শেঠি রাজ্যটির বন্যা-দুর্গত মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৫ লাখ রুপি অনুদান দিয়েছেন।
ইতিমধ্যে সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে মেঘালয়ের চারটি অঞ্চল দেখার জন্য চারটি কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। প্রতিটি কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন একজন করে মন্ত্রী। কিছু অংশ ধসে পড়লে জাতীয় মহাসড়ক-৬ এ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। মহাসড়কটি ত্রিপুরা, দক্ষিণ আসাম, মিজোরাম এবং মেঘালয়ের কিছু অংশের যোগাযোগের একমাত্র উপায় বলা যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন