শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সিংড়ায় জোড়া খুন গ্রামছাড়া দু’শতাধিক নারী-পুরুষ

নাটোর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সিংড়ায় সাবেক ইউপি মেম্বার মোজাফফর হোসেন মোজাই ও তার বড় ভাই হাছেন আলী হত্যার ঘটনায় আতঙ্কিত জনপদে পরিণত হয়েছে উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের বড়গাঁ গ্রাম। সন্ধ্যা নামলেই নেমে আসে নীরবতা। জোড়া খুন মামলার বাদিপক্ষের চাঁদাবাজি, হুমকি-ধমকি এবং নিরীহ লোকজনদের মামলায় জড়ানোর অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ঝামেলা এড়াতে গ্রাম ছেড়েছে প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। এদিকে জোড়া খুন ঘটনার পর মামলার প্রধান আসামি বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইউনুস আলী ও অন্যতম আসামি ইয়াসিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ধরে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে তাদের পরিবার। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, গত ১৮ আগস্ট আশুলিয়া এলাকা থেকে ইউনুস, ইয়াসিন, শামিম ও রুহুলকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন। আটকের পর শামিম ও রুহুলকে গ্রেফতার দেখানো হলেও ইউনুস ও ইয়াসিনের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সূত্র ও স্থানীয়রা জানায়, গত ২৮ মে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে ইউনুস আলীর কাছে পরাজিত হন মোজাফফর হোসেন মোজাই। এ নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। গত ৫ আগস্ট বর্তমান মেম্বার ইউনুস আলীর বাড়ির পাশে নির্মমভাবে খুন হন সাবেক মেম্বার মোজাই ও তার বড় ভাই হাছেন। এ ঘটনায় মোজাইয়ের স্ত্রী রাবেয়া বাদি হয়ে সিংড়া থানায় ইউনুসসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতদের নামে হত্যামামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে হামলা-মামলা ও ঝামেলা এড়াতে গা-ঢাকা দিয়েছে স্থানীয় অনেকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাদিপক্ষের লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করছে। হামলা ও মামলার ভয় দেখাচ্ছে। মামলায় ৭ জন মহিলাকেও আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তাছাড়া আসামির তালিকা যেমন বাড়ছে তেমনি হয়রানিও বাড়ছে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, আ’লীগ নেতা, ব্যবসায়ী, ছাত্র-ছাত্রী, কৃষক, শ্রমিকসহ গ্রামের সাধারণ মানুষ রয়েছে আসামিদের তালিকায়। এদের মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন মাসদার ও আ. সালাম। শিক্ষার্থী রয়েছে হালিমা, আল আমিন, মিলন, আওয়ামী লীগ নেতা সোলাইমান, কৃষক পঙ্গু ইউনুস আলী ও রাজুসহ আরো অনেকে। ইউনুসের স্ত্রী বেদেনা জানান, বাদিপক্ষের লোকজন তাদের ২৮ বিঘা জমির আমন ধান কাটতে দেয়নি, যা জমিতেই নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া নিজস্ব পুকুরে মাছ ধরতে দেয় না। ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএম আবুল কালাম জানান, এলাকায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। দু’পক্ষের লোকজনদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর দেয়া উচিত। সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন ম-ল জানান, বড়গাঁওতে জোড়া খুনের ঘটনায় ইতোমধ্যেই ১৪ জন আসামিকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে শামিম ও শাহাদত আদালতে হত্যায় জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন