স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, অতিমাত্রায় উঁচু অঞ্চল থেকে পানি প্রবাহিত এবং অনেক বেশি বৃষ্টি হলে ঢাকাও প্লাবিত হতে পারে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের পানিবদ্ধতা নিরসনে এবং ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সরকারের সবধরনের প্রস্তুতি আছে। বন্যা মোকাবিলায় যুগ্মসচিব জসিম উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে কমিটি করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। পরে প্রয়োজনে পরিবর্তন করা হবে। এছাড়া যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করার সার্মথ্য সরকারের আছে।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের শুরুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর পানিবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রম পর্যালোচনা এবং ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তাজুল ইসলাম বলেন, বন্যা কোন পর্যায়ে যেতে পারে, তার কোনো পূর্বাভাস কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের দেয়নি। যারা পূর্বাভাস দেয়, তারা বলেছে, একটা আগাম সতর্কতা আছে। তবে সেটা কোন পর্যায়ে যাবে, তা বলা হয়নি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে সিঙ্গাপুর পুরো প্লাবিত হয়েছে, সেখানে গাড়িগুলো নৌকার মতো ভাসছিল। এরকম পরিস্থিতি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখেছি। নিউইয়র্কে দেখেছি, সাবওয়েতে পানি ঢুকে গেছে। নিউইয়র্কও কিন্তু প্লাবিত হয়েছে। প্রাকৃতিক বিষয়ে তো কেউই প্রস্তুত থাকে না। তবে আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিম্নাঞ্চলটা দ্রুত প্লাবিত হয়। আমরা এখনো সব কাজ করে ফেলতে পেরেছি, তা নয়। কিছু খাল দখলমুক্ত করা হয়েছে। উদ্ধার কাজ চলমান আছে। সিটি করপোরেশনে নতুন অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ডগুলো বেশিরভাগই নিম্নাঞ্চলে। সেখানে অবকাঠামোগত সমস্যা আছে, যা নিরসনে চার হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দিয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। কাজ চলমান রয়েছে, শেষ হলে সেখানকার অনেক উন্নতি হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের কিছু কিছু অঞ্চল পানিবদ্ধ হয়েছে। প্লাবিত হওয়ার কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের জন্য মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিক সব প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ সবাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্যোগে আক্রান্ত এলাকায় মানুষের পাশে সর্বাত্মকভাবে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, পানিবদ্ধতা নিরসনে ঢাকায় যতগুলো খাল আছে, সেগুলো সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের উদ্যোগ নিয়েছি। অনেকগুলো করাও হয়েছে। যার সুফল আমরা এরই মধ্যে ভোগ করছি। মন্ত্রী বলেন, সিলেট, সুনামগঞ্জ, জামালপুর, নেত্রকোনাসহ যেসব অঞ্চলে পানিদ্ধতা হয়েছে। সেগুলো বৃষ্টির পানি পাশাপাশি উঁচু অঞ্চলের পানির প্রভাব আছে। বন্যায় ঢাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা আছে, এক্ষেত্রে সরকারের প্রস্তুতি কেমন এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ১০০ অথবা ১১০ বছরে হয়তো এমন দুর্যোগ আসে। এ অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন সময় এমন দুর্যোগ মোকাবিলা করেছে। দুর্যোগের জন্য সবসময় আমাদের প্রস্তুতি থাকে। সভায় উত্তর কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন