মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

ভবন নির্মানে রাজউকের নিয়ম মানা হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করবে সিটি করপোরেশন : এলজিআরডি মন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২২, ১০:৪৬ পিএম

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় যেকোনো ভবনের নকশা এবং স্থাপত্য সম্পর্কিত বিষয়ে অনুমোদন দিবে রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (রাজউক)। তবে এসব স্থাপনা রাজউক’র অনুমোদিত বিষয়গুলো মেনে যথাস্থানে বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করবে সিটি করপোরেশন। তাজুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়স্থ এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

দেশব্যাপী ডেঙ্গু এবং মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য চলতি ২০২২ সালে এই প্রথম এ আঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

তাজুল ইসলাম জানান, ভবন বা অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে রাজউক থেকে অনুমোদন নেয়ার পর বিষয়টি সিটি করপোরেশনকে অবহিত করতে হবে। ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থানটি সরকারি জায়গা বা ভবন নির্মাণের উপযুক্ত কি-না বা ভবনের নকশা বা ডিজাইনে রাজউকের অনুমোদন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি-না, সে-বিষয়ে দেখভাল করবে সিটি কর্পোরেশন। তিনি বলেন, ১৪ তলার অনুমতি নিয়ে ২০ তলা ভবন নির্মাণ কিংবা তিন হাজার স্কয়ার ফিটের অনুমতি নিয়ে ছয় হাজার স্কয়ার ফিট বানানো বিল্ডিং কোড লংঘণের সামিল। তাই, এসব বিষয়ে নজরদারি করবে সিটি কর্পোরেশন। কারণ, পরিকল্পিত নগরী গড়তে হলে এর কোন বিকল্প নেই বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলকার বছিলায় খাল দখল প্রসঙ্গে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সেখানে খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন যদি জানতো তাহলে অবশ্যই এসব নির্মিত হতো না। আর হলেও তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা যেত।’ অপরিকল্পিতভাবে শহর গড়ে উঠেছে, এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, যদি পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য নগর গড়তে হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার কোন বিকল্প নেই। কাউকে হয়রানি করার জন্য এসব করা হচ্ছে না বলেও তিনি জানান।

এর আগে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তৃতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সকল নাগরিককেও ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি রেলওয়ে, সিভিল এভিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করলে সমস্যা সমাধান করা সহজ হবে।

মন্ত্রী বলেন, বাড়ি-ঘর, অফিস-আদালত, রাস্তা-ঘাট, ড্রেন, খাল-নালা সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তিনি যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে সকলকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন.‘খুব শিগগিরই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। আশা করি যেখানে-সেখানে আর বর্জ্য পড়ে থাকবে না’।

তাজুল ইসলাম বলেন, এডিসসহ অন্যান্য মশার প্রজনন বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এখন থেকেই ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো শুরু করতে হবে। মশার কোনো বর্ডার নেই। উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মশা থাকলে দক্ষিণে হবে না অথবা এক বাসায় হলে অন্য বাসায় হবে না এমনটি বলা যাবে না। মশা নিধন করতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে। তিনি বলেন,‘মশামুক্ত নগরী গড়তে আমরা সবাই বদ্ধপরিকর। ছাদ-বাগানে মশার যাতে প্রজনন না হয় এ বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে’।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

তারা জানান, এডিস মশাসহ অন্যান্য মশা নিধনে চলতি বছরের জন্য পর্যাপ্ত কিটনাশক মজুদ রয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়রদ্বয় তাদের কর্মপরিকল্পনাও তুলে ধরেন। এসময় তারা অভিযান পরিচালনা করার জন্য বিগত বছরের ন্যায় এবছরও ১০ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আবেদন জানালে মন্ত্রী ম্যাজিস্ট্রেট পদায়নেরও আশ্বাস দেন।

সভায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো.আসাদুর রহমান কিরন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Almamun ৪ মার্চ, ২০২২, ১০:২৩ এএম says : 0
দূর্নীতির নতুন ধান্দা। হাজার হাজার নতুন বাড়ি তৈরি হয়েছে তখন রাজউক চোখে টিনের চশমা দিয়ে বসেছিল।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন