বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সøীপের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বিভিন্ন দফতরে

সখিপুরের ১৪৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়

সখিপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ কোটি ২লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে গত অর্থবছরে ১৫ হাজার করে দুইবার এবং এ অর্থবছরে ৪০ হাজার করে ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ কোটি ২লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। স্ব স্ব বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে প্রধান শিক্ষকের গড়মিল বা বনিবনা না থাকায় সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে স্লীপের টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে  প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির লিখিত অভিযোগ দাখিল করার প্রমাণও পাওয়া গেছে। অথচ ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১৫+১৫+৪০=৭০ হাজার স্লীপের  টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু অতীব দুঃখজনক হলেও সত্য স্ব স্ব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে মিল থাকায় স্লীপের টাকা আত্মসাতের কোন অভিযোগ নেই। স্লীপের টাকা যথাযথভাবে কাজ করা হচ্ছে কিনা তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারি শিক্ষা অফিসার ও ক্লাস্টারকে ম্যানেজ করেই স্লীপের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করে জানা গেছে। প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একই চিত্র। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে মিল না থাকায় এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে সরকারি বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে উপজেলার তক্তারচালা মাওলানা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি এম এ গণি প্রাথমিক  শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে স্থাপিত তক্তারচালা মাওলানা পাড়া কমিউনিটি বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে সরকারিকরণ করা হয়। ওই সময় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে সরকারি অনুদানের টাকা উত্তোলনের জন্যে সোনালী  ব্যাংক সখিপুর শাখায় একটি হিসাব নম্বর (৩৩০৩০৫৬৬) খোলা হয়। সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে বিগত তিন বছর ধরে ওই হিসাব থেকে এক লাখ ২৭ হাজার টাকা উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমি বিদ্যালয়ের একটি টাকাও ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করিনি। ওই টাকা বিদ্যালয়ের কাজে ব্যয় করা হয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এম এ গণি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে আজ পর্যন্তÍ ব্যাংকের হিসাবের কিছুই আমাকে জানানো হয়নি। আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক সব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল হক বলেন, ওই বিদ্যালয়ের সভাপতির একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা উপবৃত্তি মনিটরিং কর্মকর্তা আসাফুদ্দৌলা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সে অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, শুধু একটি স্কুল নয়, উপজেলার ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লীপের টাকার কি কাজ হয়েছে তদন্ত করলে দুই অর্থবছরে বরাদ্দকৃত ১০কোটি ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাতের চিত্র বেরিয়ে আসবে। এতে স্ব স্ব বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক উভয়ই অভিযুক্ত হবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন