শেরপুরের শ্রীবরদীতে ট্রিপল মার্ডার মামলার আসামির ছেলে-মেয়েও চায় বাবার ফাঁসি হোক। প্রসঙ্গত, বোরখা পড়ে কুপিয়ে স্ত্রী, শাশুড়ি ও চাচা শ্বশুরকে হত্যা এবং শ্বশুর-শ্যালক ও চাচী শাশুড়িকে আহত করায় সপ্তাহ পরও এলাকায় শোকের মাতম কাটেনি। পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসী শোকে মূহ্যমান। ঘাতকের ছেলে-মেয়ের সাথে সুর মিলিয়ে এলাকাবাসিও চায় নিষ্ঠুর ঘাতক মিন্টুর ফাঁসি হোক। মিন্টুর ছেলে মনিরুজ্জামান ও মেয়ে মারিয়া আক্তার তাদের বাবার ফাঁসি চায়। শ্রীবরদীর উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পটল গ্রামে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। ওই মামলার অপরাপর ৩ আসামিকে এখনও গ্রেফতার যায়নি। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মিন্টু পারিবারিক কলহে স্ত্রী মনিরা বেগমসহ পরিবারের ৬ জনকে কুপিয়ে হতাহত করায় পটল গ্রামের ওই বাড়িতে শোকে মূত্রিমান পাথর হয়ে গেছে বাড়ির শোকাহত স্বজনরা। ঘটনার পর থেকে চুলা জ্বলছে না। অনাহারেই দিন কাটছে বাড়ির লোকজনের। নিহত মাহমুদ হাজীর ছেলে জিসান বলেন, একই বাড়িতে ৩টি মার্ডার! কোনোই কারণ ছাড়া। আমাদের চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। কাঁদতেও পারি না। বাবা ভালো মানুষ ছিল। বোন মনিরাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মেরে ফেলে মিন্টু। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ওসি বলেন, ‘আসামি মিন্টু আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বোরখা পরে কুপিয়ে ৩ জনকে হত্যা ও একই পরিবারের আরও ৩ জনকে রক্তাক্ত জখম করার দায় স্বীকার করেছে। মিয়নাতদন্তের রিপোর্ট ও ভিকটিমদের মেডিকেল রিপোর্ট পেলে দ্রুত আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারব’। ঘাতক মিন্টুর ফাঁসির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আশা করছি মামলায় উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই হবে। প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুন শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পটল গ্রামে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু বুরখা পড়ে মেয়ে সেজে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৬), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫২), চাচা শ্বশুর মাহমুদ হাজীকে (৬১) কে হত্যা করে। মারাত্মক আহত হয় মিন্টুর শ্বশুর মনু মিয়া, তার ছেলে শাহাদত হোসেন ও নিহত মাহমুদের স্ত্রী ফুল ছাহারা (৫৩)। আহত মনু মিয়াকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক। হত্যাকান্ডে মিন্টুকে প্রধান আসামি করে মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে শ্রীবরদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন মনু মিয়ার মেয়ে মিনারা বেগম। পরে পুলিশ মিন্টুকে গ্রেফতার করে। কোর্টে পাঠালে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন