কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিপুল চাহিদা থাকার সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ বালু লুটপাটকারী সিন্ডিকেট। নির্বিচারে বালি উত্তোলন ও পরিবহনের ফলে একদিকে যেমন গ্রামীণ সড়ক খানাখন্দকে একাকার হচ্ছে, অন্যদিকে অব্যাহত ভাঙনে বসতবাড়ি, কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। উপজেলা ভূমি প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে বালি উত্তোলনের যন্ত্রপাতিসহ সংশ্লিষ্টদের আটক করে বড় অংকের জরিমানা করলেও ঠেকানো যাচ্ছে না অবৈধ বালুবাণিজ্য। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, দোছরী ও হরিণমারা ৪টি স্পটের বালিমহাল চলতি অর্থবছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। এখাতে সরকার রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হলেও আরো ১২টি স্পটে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন চলছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পালংখালী, থাইংখালী, বালুখালী ছড়া, হিজলিয়া, রেজুখাল, বড় ইনানী, ছোট ইনানী, চেংছড়ি, ডিগলিয়া, গয়ালমারা, মরিচ্যা ও খুনিয়াপালং খালসহ ১২টি স্পট থেকে দৈনিক শত শত গাড়ি বালি বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে। এখাতে মধ্যস্বত্বভোগী এক শ্রেণির সংঘবদ্ধ বালি লুটপাটকারী সিন্ডিকেট আর্থিকভাবে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খালের পাড়ে বসবাসরত শত শত পরিবার। সম্প্রতি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা নুরুদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী নোমান থাইংখালী খালে অভিযান চালিয়ে ড্রেজার মেশিনসহ সাবেক ইউপি সদস্যকে আটক করে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর আগে রেজুখালে অভিযান চালিয়ে অনুরূপ ড্রেজার মেশিনসহ বালি উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের একজন সদস্যকে আটক করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় রেজুখালের প্রচ- ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা ভূমি প্রশাসন ঘটনাস্থল রেজুখালের চরপাড়া এলাকা পরিদর্শন করে ওই এলাকাটি বালি ইজারা মুক্ত করে সেখান থেকে বালি উত্তোলন না করার জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করেন। এ সময় উপজেলা প্রশাসন ওই স্থানে লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করে দেন। এভাবে কিছুদিন বালি উত্তোলন বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি অবৈধ বালি লুটপাটকারী সিন্ডিকেট আবারও তৎপর হয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে ঘোরাঘুরি করছে বলে অভিযোগ করে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী জানান, উক্ত সিন্ডিকেট যেকোনো উপায়ে বালিমহাল ইজারা নিয়ে ফের বালু উত্তোলন শুরু করতে পারে। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরুদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী নোমান জানান, অবৈধ বালি উত্তোলনকারীদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি এও বলেন, সর্বসাধারণের ক্ষতি হয় এমন অবস্থায় কোনোভাবেই বালিমহাল ইজারা দেয়া হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন