কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা বা কুরবানি ঈদ। তাই কুরবানি পশুর গোশত কাটার নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী মেরামত কিংবা নতুন করে তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গফরগাঁও উপজেলা সদরসহ গোটা গ্রামবাংলার আনাচে-কানাচের কামারপাড়া। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই কামার পরিবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা রাতদিন ঘুম বাদ দিয়ে তৈরি করছে হরেক-রকমের দা, ছুড়িসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। অনেকেই আবার পুরাতন দা, বটি ও ছুড়ি নতুন করে মেরামত করার জন্য কামারের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। গফরগাঁও পৌরসভাসহ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে শত শত কামার পরিবার এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। গফরগাঁও পৌর শহরের নতুন বাজারের কামার গোপাল চন্দ্র বিশ^াস জানান, ভাইরে আমরা কোন ব্যাংক হতে ঋণ পাইনা। ঋণ পাওয়া গেলে আমাদের জন্য ভাল হতো।
সে আরও জানান, অন্যান্য বারের তুলনা এবারে নতুন দা-ছুরি-বটি ইত্যাদি তৈরির অর্ডার বেড়েছে। আর পুরাতনগুলো মেরামত হচ্ছে পরিমানে বেশি। বিশেষ করে কুরবানির ঈদ এলে এসব দা-বটিসহ অন্যান্য উপকরণের কদর বেড়ে যায়। চলতি মৌসুমে কয়লার অভাবে কাজ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এখন কয়লা পাওয়া দুস্কর হয়ে দাড়িয়েছে। কয়লা পাওয়া গেলেও তা দামও চড়া। কালের বিবর্তমানে গ্রামবাংলার কয়লা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন গ্রামবাংলায় এলপিগ্যাস ও বন্ধু চুলা দিয়ে রান্না করা হচ্ছে। কামারপট্টিতে দিন-রাত পোড়া কয়লার গন্ধ, হাঁপড়ের হাঁস-ফাঁস আর হাতুঁড়ি পেটানোর টুং-টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে গ্রাম বাংলার চকচকে ধারালো দা-চাপাতি, ছুরি, বটিসহ নিমিষে গোশত কাটার-কুটার উপকরণ। কামার দোকানিরা জানান, কয়লা, লোহাসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে নতুন দা, বটিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদ্রির দামও বেড়ে গেছে। বছরের মধ্যে ১১মাসেই কামার পরিবারদের বসে থাকতে হয়। শুধু কুরবানির ঈদ এলেই তাদের ব্যস্ততা পুরোদমে বেড়ে যায়। এসময়টাই কিছুটা ক্ষণিকের জন্য আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়। এছাড়া অনেক কামার বাড়ি বাড়ি গিয়ে দা-বটি-ছড়ি মেরামত করে থাকে। দোকানে আসা ক্রেতা মো. এমদাদুল হক (ইন্তু মহাজন) জানান, ভাইরে গরু জবাই করার জন্য বড় একটা ছুরি তৈরি করার অর্ডার দিয়েছি। তার দাম হলো একহাজার পাঁচশত টাকা মাত্র। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে কুরবানি দেয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন