মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ সীমান্তের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করছে। সেসব অনুপ্রবেশের করা চিহ্নিত স্থানগুলো পরিদর্শন করেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। পরিদর্শন শেষে ২৫ নভেম্বর শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফ স্থলবন্দরের মালঞ্চ রেস্ট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন।
মিয়ানমার থেকে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটেছে তার পরিসংখ্যান বিজিবির কাছে নেই, যে কেউ এর তালিকা তৈরী করতে পারবে, তাতে কোন সমস্যা নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সীমান্তের ৬৩ কিলোমিটার জল সীমান্তসহ ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের সবগুলো এলাকা সিলগালাভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয়। টহল জোরদার এলাকা বাদে যেখান থেকে সুযোগ পায় বিপদাপন্ন রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করেছে এটি অস্বীকার করার অবকাশ নেই।
যেসব এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটছে সেসব এলাকা চিহ্নিত করে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হলে লোকাল কমিউনিটি এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিজিবি ডিজি আবুল হোসেন বলেন, এ সম্পর্কে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ চিন্তা করছে। বিজিবির কাজ হচ্ছে সীমান্ত পাহারা দেয়া। অনুপ্রবেশ রোধে সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছে বিজিবি।
সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করতে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার বিষয়ে ডিজি বলেন, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্ট করা হয়েছে। তবুও অনুপ্রবেশ রোধ করা সম্ভব হয় না। এরপরও বর্তমান সরকার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া, সড়ক ও টাওয়ার স্থাপনের চিন্তা করছে। তবে, এটি সহসা সম্ভব নয়।
বিপদাপন্ন রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তিন বলেন, এটি বিশ্বায়নের যোগ। কোনও কিছু গোপন করার সুযোগ নেই। মিয়ানমারে কি হচ্ছে এটি বিশ্ববাসী দেখছে। এরপরও বিজিবি যেসব রোহিঙ্গা আটকের পর ফেরত পাঠায় তাদের মানবিক সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে থাকে। মিয়ানমারের গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন সংবাদে বিজিবির তরফ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসময় মিয়ানমারের এক গণমাধ্যম বাংলাদেশ থেকে পার হওয়া সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় ৯ অক্টোবর বিজিপি চৌকিতে হামলার কথা উল্লেখ করেছে বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সুতরাং এখানে দেশী-বিদেশী কোন সন্ত্রাসীকে অপতৎপরতা চালানোর কোনো সুযোগ নেই। আমরা কারো শত্রু নই, সীমান্তের সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ভ্রাতৃপ্রতীম সম্পর্ক রয়েছে। হয়তো তাদের বিশ্বাসে ঘাটতি রয়েছে, তাই এমনটি চিন্তা করছে। আমরা ইতিমধ্যে মিয়ানমার থেকে আসা গুলিবিদ্ধ দুই অপরাধীকে ধরে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদের কাছে হস্তান্তর করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি চট্টগ্রাম রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফরিদ হাসান, কক্সবাজার সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার কর্নেল এম এম আনিসুর রহমান, টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিউল আলম প্রমুখ।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন গত দুই দিন আগে কক্সবাজার আসেন। বৃহস্পতিবার স্থলসীমান্ত ও শুক্রবার স্পিড বোটে শাহপরীরদ্বীপসহ নানা সীমান্ত পরিদর্শন করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন