টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে দফায় দফায় পানি বৃদ্ধির কারণে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে ভাঙছে বসতভিটাসহ চরাঞ্চলের ফসলি জমি। ফলে নিঃস্ব হচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকার হাজারো পরিবার। ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভাঙনরোধ সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এসব ভাঙন কবলিত মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে গোবিন্দাসী, নিকরাইল, অর্জুনা ও গাবসারায় যমুনার করালগ্রাসে গত একমাসের ব্যবধানে প্রায় ১,৫০০ ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এরমধ্যে গোবিন্দাসীতে সাড়ে ৫শ’, নিকরাইলে আড়াইশ’, অর্জুনায় ৪শ’ এবং গাবসারায় ৩শ’ পরিবার।
সরেজমিনে গত সোমবার সকালে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলাপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, পানির তীব্র স্রোতে বসতভিটা ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়া লোকজন তাদের থাকার ঘরগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। আবার অনেকের ঘরবাড়িগুলো নিমিষেই বিলীন হচ্ছে। বসতভিটা হারানো মানুষগুলো আহাজারি করছে।
ভাঙনের শিকার জহুরা বেগম বলেন, আমাদের গ্রামে প্রায় হাজারের ওপরে বাড়িঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। আমরা এখন নিঃস্ব। আামাদের এখন থাকার মতো কোন জায়গা-জমি নেই। ঘরে নেই খাওয়া। এ অবস্থায় সরকারিভাবে কোন ধরণের সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। এদিকে, অসংখ্য পরিবার বসতভিটা হারিয়ে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। ভাঙন কবলিতরা পড়ছেন খাদ্য সংকটে। এতে করে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।
গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার বলেন, ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ী, চিতুলিয়াপাড়া ও ভালকুটিয়ায় এলাকায় ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান জানান, ভাঙনের ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ভাঙনরোধে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
ভাঙনের বিষয়ে টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভূঞাপুরে ব্যাপকভাবে ভাঙন দেখা দেয়ায় ভাঙনরোধে ৩০০ মিটারের মধ্যে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে পর্যায়ক্রমে আরও জিওব্যাগ ফেলা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন