নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ঈদুল আযহা উপলক্ষে গরু বাজারের হাসিলের টাকা ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এক ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৫ জন আহত হয়।
রোববার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের মদিনা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রিফাতুল ইসলাম রিফাত (২৩) সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগ সদস্য ও সোনাইমুড়ী গ্রামের নোয়া বাড়ির মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। গুলিবিদ্ধ রিফাতকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুয়েল জানান সোনাইমুড়ী পৌরসভার হাইস্কুল মাঠে ঈদুল আজহা উপলক্ষে একটি গরু বাজার সরকারি ভাবে ইজারা দেওয়া হয়। ওই গরু বাজারের হাসিল আদায়ের টাকা সরকার দলীয় নেতাকর্মিদের সমন্বয় করে শিডিউল ক্রয়কারীদের মধ্যে বিতরণ করার সিন্ধান্ত নেয় স্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে সোনাইমুড়ী পৌরসভা এলাকায় সরকার দলীয় নেতাকর্মিকে হাসিলের টাকা ভাগ করে দেওয়ার কথা ছিলো। এর মধ্যে ভানুয়াই গ্রামের নেতাকর্মীকে ৪০ পার্সেন্ট, নাওতোলা গ্রামের নেতাকর্মিকে ২০ পার্সেন্ট এবং পৌরসভার ৫-৬নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মিকে হাসিলের ৪০ পার্সেন্টের টাকা ভাগ করে দেওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে আমাকে হাসিল আদায়ের ২০ পার্সেন্ট ও রাসেলদের লোকজনকে ২০ পার্সেন্টের টাকা দেওয়ার কথা হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় এমপির অনুসারী নেতারা হাসিল আদায়ের টাকা ভাগ করে রাসেলের কাছে দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে রাসেল টাকার অর্ধেক ভাগ দিবেনা বললে বিরোধ দেখা দেয়।
জুয়েল অভিযোগ করে আরো জানান, ‘এ নিয়ে শুক্রবার রাতে আমার সাথে রাসেলের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। পরের দিন জানতে পারি যাদের নামে সিডিআর ফরম কেনা হয়েছে তাদেরকে ফরম প্রতি ৪০ হাজার টাকা করে দিয়ে দেওয়া হয়। যে সব শিডিউল বিক্রি হয়েছে তার ৫টি রাসেলদের লোকজন ক্রয় করে। তারা স্থানীয় এমপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। শনিবার সন্ধ্যায় তারা আমাকে বাইপাস এলাকার একটি বাড়িতে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে ওই স্থানে তারা আমার ২জন লোককে মারধর করে। এরপর রোববার বিকেলের দিকে রাসেলও তার সাঙ্গপাঙ্গরা শিপন নামে আমাদের আরেক অনুসারীকে মারধর করে। ওই সময় আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর রোববার রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মি রিফাত তার দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে মদিনা ভবনের সামনে তাকে গতিরোধ করে রাসেল, জয়নালসহ তাদের ১০-১৫জন সাঙ্গপাঙ্গ তার ওপর হামলা চালায়। শেষে রাসেলের নির্দেশে জয়নাল নামে এক যুবক রিফাতের পায়ে গুলি চালায়।’
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো.শামল উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত রাসেল বছর খানেক আগে বিএনপি থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। কিছু দিন আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় বলেও জানান তিনি। গরু বাজারের হাসিলের টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে রিফাতকে গুলি করে রাসেল ও তার সহযোগী বহিরাগত সন্ত্রাসীরা।
নোয়াখালী-১ আসনের (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম জানান, অভিযুক্ত যুবক তার অনুসারী নয়। তাকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রিফাত নামে এক যুবকের পায়ের পাতায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন