শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কে জানা যাবে ৫ সেপ্টেম্বর

জনসনের বিরুদ্ধে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’ লেবার পার্টির

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভদের নতুন নেতার নাম আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির শীর্ষ কর্তারা। তারা মূলধারার বাইরের প্রার্থীদের দ্রুত বাদ দিতে নেতা হওয়ার দৌড়ে ঢোকা এবং লড়াইয়ে টিকে থাকার পথও আগের তুলনায় কঠিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একের পর এক ভোটের মাধ্যমে টোরি এমপিদেরকে আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে দুই প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে হবে। দলের প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার সদস্য পরে পোস্টাল ব্যালটে এ দু’জনের মধ্যে একজনকে বেছে নেবেন।

এখন পর্যন্ত বরিস জনসনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে ১১ জন তাদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। প্রীতি প্যাটেলসহ আরো কয়েকজন এ তালিকায় যুক্ত হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে ব্রেক্সিট অপরচুনিটিজ মন্ত্রী জ্যাকব রিস-মোগ টেলিগ্রাফকে বলেছেন, তিনি নেতা হওয়ার দৌড়ে থাকছেন না। ‘ডানপন্থিদের আরো বিভক্ত না করে ঐক্যবদ্ধ করাই আমার লক্ষ্য’, বলেছেন তিনি।

নিজ দলের এমপি-মন্ত্রীদের বিদ্রোহের কারণে গত সপ্তাহে জনসনকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। এখন পর্যন্ত যারা নেতা হওয়ার লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন, তাদের প্রায় প্রত্যেকেই কর কমানোর অঙ্গীকার করলেও বিশ্লেষকরা এ প্রতিশ্রুতি ‘সহজে বাস্তবায়নযোগ্য নয়’ বলেই মনে করছেন।

কেবল সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাকই বলেছেন, মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার আগ পর্যন্ত কর কর্তন ঠিক হবে না। কনজারভেটিভ দলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দলের শীর্ষ নেতা বেছে নেওয়ার যে সময়সীমা ঠিক করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলবার আগ্রহীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর বুধবার থেকেই চূড়ান্ত দুই প্রার্থী ঠিক করার মিশনে নেমে যাবেন টোরি এমপিরা।

ওই দুই প্রার্থীর মধ্যে দলের সাধারণ সদস্যরা কাকে ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে পাঠাচ্ছেন, তা জানা যাবে ৫ সেপ্টেম্বর। ১৯২২ ব্যাকবেঞ্চ কমিটির ঠিক করে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী এবার মনোনয়নপত্র জমা দিতেই ২০ এমপির সমর্থন জোগাড় করতে হবে; প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকাতে লাগবে অন্তত ৩০ এমপির সমর্থন, আগের বার এ সংখ্যা ছিল ১৮।

এদিকে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, উত্তরসূরী হওয়ার দৌড়ে কাউকেই সমর্থন দেবেন না তিনি। তিনি বলেছেন, ‘সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে কারো সম্ভাবনা নষ্ট করতে চাই না আমি’।
লেবার নেতা কির স্টারমার টোরি নেতা হওয়ার লড়াইয়ে নামা প্রায় সবার কর কমানোর অঙ্গীকারের তীব্র সমালোচনা করে এ প্রার্থীরা ‘রূপকথার অর্থনীতিতে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নেমেছেন’ বলে অভিযাগ করেছেন। একই প্রার্থীরা জনসন সরকারের আমলে কর বাড়ানোকে সমর্থন দিয়েছিলেন জানিয়ে তাদের এখনকার অবস্থানকে ‘ভণ্ডামি’ বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।

জনসনের বিরুদ্ধে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’ লেবার পার্টির : যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা জানায় একটি সূত্র। গতকাল এ অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর আজ বুধবারই তার ওপর ভোট হতে পারে বলে সূত্রটির প্রত্যাশা।
অনাস্থা প্রস্তাব আনার অর্থ হচ্ছে, পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলের আইনপ্রণেতারা জনসনের সরকার বহাল থাকবে কি থাকবে না, তার ওপর ভোট দিতে পারবেন। ভোটে বর্তমান সরকার উৎরাতে না পারলে তা নতুন জাতীয় নির্বাচনের পথও খুলে দিতে পারে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বিভিন্ন জনমত জরিপে কনজারভেটিভরা লেবারদের তুলনায় পিছিয়ে থাকায় এবং টোরিরা তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করায় পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধীদলের এবারের অনাস্থা প্রস্তাব সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে তাদের রায় জানাক- সরকারি দলের সদস্যরা এখনই তা চাইবেন না বলেই মনে হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে কয়েক ডজন মন্ত্রী ও সহযোগী পদত্যাগ করার পর জনসন গত সপ্তাহে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন; তবে নতুন নেতা নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তারই ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকার কথা। টোরি প্রধানের দায়িত্ব ছাড়ার অর্থ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকেও জনসনের বাদ পড়া। যুক্তরাজ্যে সাধারণত ক্ষমতাসীন দলের প্রধানই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

কনজারভেটিভ পার্টির নীতিনির্ধারণী পরিষদ নতুন নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়া এরই মধ্যে ঘোষণা করে দিয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দলপ্রধান ও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তারা। লেবার পার্টি চাইছে, যত দ্রুত সম্ভব জনসনকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দিতে। নতুন নেতা নির্বাচনের আগেই কনজারভেটিভরা যদি জনসনকে না সরায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার হুমকিও আগেই দিয়ে রেখেছিল তারা। সূত্র : রয়টার্স, স্কাই নিউজ ও গার্ডিয়ান।


কা'বা গৃহ বরকতময় ও কল্যাণের আধার
এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী
আল্লাহ জাল্লা শানুহু প্রথম থেকেই পবিত্র কা’বা গৃহকে বরকতময় ও কল্যাণের আধার হিসেবে নির্ধারণ করে রেখেছেন। এতদ প্রসঙ্গে আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য নির্ধারিত হয়েছে, যা বাক্কায় (মক্কার পূর্ববর্তী নাম) অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের হেদায়েতের জন্য ও বরকতময়। (সূরা আলে ইমরান : ৯৬)।

এই আয়াতে কারীমায় মহান আল্লাহপাক কা’বা গৃহের তিনটি ফজিলতের কথা বিবৃত করেছেন। প্রথমত, কা’বা গৃহ হচ্ছে মানুষের জন্য প্রথম ইবাদত গৃহ। দ্বিতীয়ত, কা’বা গৃহ হচ্ছে সারা দুনিয়ার মানুষের হেদায়েতের নিদর্শন এবং তৃতীয়ত, কা’বা গৃহ হচ্ছে বরকতময়। বক্ষমান ক্ষুদ্র নিবন্ধে আমরা কা’বা গৃহের বরকতময় ও কল্যাণের আধার হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করতে প্রয়াস পাব। আসুন, এবার সেদিকে নজর দেয়া যাক।
উল্লিখিত আয়াতে কারীমায় কা’বা গৃহকে ‘মুবারক’ অর্থাৎ বরকত ও কল্যাণের আধার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আরবী ‘মোবারক’ শব্দটি শব্দমূল ‘বরকত’ থেকে উদ্ভূত। বরকত শব্দের অর্থ বৃদ্ধি পাওয়া, বর্ধিত হওয়া, বিস্তৃত হওয়া ইত্যাদি। তবে স্মরণ রাখা দরকার যে, কোনো বস্তুর বৃদ্ধি দু’ভাবে হতে পারে। প্রথমত, বস্তুর প্রকাশ্য আকার অবয়ব ও পরিধি বেড়ে যাওয়া। যেমন মানব দেহ বৃক্ষ ও লতার বৃদ্ধি পাওয়া।

এসব বস্তুর বাহ্যিক বৃদ্ধি অতি সহজেই অনুধাবন করা যায়। দ্বিতীয়ত, অর্থগত, মর্মগত ও গুণগত দিক থেকে বৃদ্ধি পাওয়া। মোট কথা, তদ্বারা এত বেশি কাজ নিষ্পন্ন হওয়া যা তদপেক্ষা বেশি বস্তুর দ্বারা ও সাধারণত সম্ভব হয়ে উঠে না। অর্থগত দিকের এই পরিবৃদ্ধির শেষ সীমানা নিরূপণ করা যায় না। বস্তুত, কা’বা গৃহের বরকতময় হওয়ার বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশত ও অর্থগত উভয় দিকে থেকেই সুমহান মর্যাদার শৈল শিখরে অধিষ্ঠিত আছে এবং থাকবে। এর কোনো পরিবর্তন সাধিত হবে না।

কা’বা গৃহের প্রকাশ্য ও বাহ্যিক বরকতময় হওয়ার নজির এই যে, এই গৃহের মূল ভিটি বা ভিত্তি মহান আল্লাহ জাল্লা জালালুহু স্থির করেছেন। একই সাথে এই গৃহকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানাদি সুষ্ঠুভাবে নিষ্পন্ন করার লক্ষ্যে এর চত্বর বা চার পাশ বর্ধিত হয়েই চলেছে। প্রয়োজন অনুসারে এই বৃদ্ধি হবেই। আর এর দ্বিতীয় নজির এই যে, ভৌগোলিক দিক থেকে মক্কা ও এর আশপাশের এলাকা পাহাড়, পর্বত, টিলা, টক্কর, অনুর্বর বালুকাময় মরুভূমি সদৃশ। এই বিস্তীর্ণ এলাকায় পানির বড় অভাব। বালুকাময় এই বিশুষ্ক মরুতে খাদ্যশস্য, ফল-মূল, তরিতরকারি এবং মানব জীবনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিছুই উৎপাদিত হয় না।

কিন্তু এতদসত্ত্বেও মক্কা নগরীর অধিবাসীরা এবং বহিরাগতরা, এমনকি হজের সময় সমবেত লক্ষ লক্ষ হাজী সাহেবানদের খাওয়া-পরা, চলাফেরা এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর সমারোহ এত বিপুল পরিমাণে মক্কায় মজুদ থাকে, যা কল্পনার অতীত। সেখানকার লোকজনদের অভাব বলতে কোনো কিছু পূর্বেও ছিল না, এখনও নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। এর তৃতীয় নজির এই যে, আদিকাল হতে শুরু করে মক্কা নগরীর জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। এদের সাথে সারা বছরই বহিরাগত ওমরা আদায়কারীরা মিলিত হচ্ছে এবং হজের সময় বহিরাগত হাজীদের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এত কিছুর পরও কুরবানির পশু উট, দুম্বা, ছাগল, ভেড়ার কোনো অভাব সেখানে দেখা দেয় না। এমনকি, মক্কার অধিবাসীরাও সারা বছরই এসব হালাল পশুর গোশ্ত ও দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং মক্কায় এত সব আয়োজন এবং এত সব প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা কা’বা গৃহের মর্যাদার কারণেই হয়ে থাকে। তা নতুন করে বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।

বস্তুত, কা’বা গৃহের প্রকাশ্য ও বাহ্যিক বরকতময় হওয়ার বিষয়টির পাশাপাশি এর অর্থগত, গুণগত ও আধ্যাত্মিক বরকতের বিষয়টিও প্রণিধানযোগ্য। আধ্যাত্মিক বরকত যে কি পরিমাণ হয়ে থাকে তার সীমা-পরিসীমা নির্ণয় করা একান্তই দুরূহ ব্যাপার। হজ ও ওমরাসহ অন্যান্য সকল শ্রেণির এবাদতই কা’বা গৃহে সম্পন্ন করা যায়। এসব ইবাদতের সওয়াব বিরাট অঙ্কের হয়ে থাকে এবং এতে বেশি কল্যাণ লাভ করা যায়, যা কা’বা গৃহ ব্যতীত অন্য স্থানে আদায়কৃত ইবাদতে আশা করা যায় না।

এ প্রসঙ্গে পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলূল্লাহ (সা.) বলেছেন : বাসগৃহে নামায আদায় করলে এক নামাযের সওয়াব পাওয়া যায়। কিন্তু মহল্লার মসজিদে আদায় করলে পঁচিশ নামাযের সওয়ার লাভ করা যায়। জামে সমজিদে আদায় করলে পাঁচশত নামাযের সওয়াব পাওয়া যায়। মসজিদে আকসায় আদায় করলে এক হাজার নামাযের সওয়াব পাওয়া যায়। আমার মসজিদে (মসজিদে নববীতে) আদায় করলে পঞ্চাশ হাজার নামাযের সওয়াব পাওয়া যায়। আর মসজিদে হারামে (কাবা গৃহের মসজিদে) আদায় করলে এক লক্ষ নামাযের সওয়াব লাভ করা যায়। (সুনানে ইবনে মাজাহ; ত্বাহাভী)।

আর একথা স্বতঃসিদ্ধ যে, বিশ্বের সকল শ্রেণির মানুষই কাবা গৃহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং মনের গহন হতে এর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করাকে অত্যন্ত আবশ্যকীয় বলে মনে করে। এমনকি হরমে কাবার অভ্যন্তরে যুদ্ধ বিগৃহ করা ও খুনখারাবি করাকে জঘন্যতম অপরাধ বলে গণ্য করে। এমনটি হওয়া সারা দুনিয়ায় কেবলমাত্র

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন