শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

২০১৪ ও ’১৮ সালের ভোট নিয়ে অতিমাত্রায় বিতর্ক আছে

ইসি ভবনে সংলাপে সিইসি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২২, ১২:২২ এএম

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অতিমাত্রায় সমালোচনা ও তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনাও তীব্র ও তিক্ত। আমরা নিরপেক্ষ থেকে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে সমালোচনা ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকতে চাই।
রাজধানীর নির্বাচন ভবনে গতকাল রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। ১৭ জুলাই শুরু হওয়া এ সংলাপের শেষ দিন গতকাল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টি সংলাপে অংশ নেয়।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা কমিশনের সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব। একইভাবে কমিশনকে সহায়তা করা সরকারের সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব। আমরা সে দায়বদ্ধতা থেকেই সংলাপের আয়োজন করেছি। ১৯৭০ থেকে আমরা নির্বাচন দেখে এসেছি। ১৯৫৪ সালের নির্বাচন আমরা জানি। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এক অর্থে সাম্প্রতিক। রাষ্ট্রপতি শাসিত নির্বাচন পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন হয়েছে। সংসদীয় পদ্ধতিতে ১৯৯১ সাল থেকে সম্ভবত নির্বাচন হচ্ছে। অতীতের অনেক নির্বাচন নিয়েই সমালোচনা বা তর্ক-বিতর্ক হলেও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অতিমাত্রায় সমালোচনা ও তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনাও তীব্র ও তিক্ত। নিরপক্ষ থেকে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে সমালোচনা ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকতে চাই।

সিইসি বলেন, আমরা প্রায় চার-পাঁচ পর্বে সংলাপের আয়োজন করেছিলাম। সুধীজনরা তাদের মতামত উপস্থাপন করেছেন। নির্বাচনে অর্থশক্তি, পেশি শক্তির প্রভাব, সহিংসতা, ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই করে বাক্স ভরা, ভোট কেন্দ্রে বাধা প্রদান, আমলতন্ত্রের পক্ষপাতিত্ব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা, নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততা নিয়ে মতামত উঠে এসেছে। আমরা মতামতকে পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময়ে অবহিত করেছি।

সিইসি বলেন, আমরা নির্বাচন অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে চেষ্টা আন্তরিকভাবে করে যাবো। এই সংলাপ বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে। আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় দল। বড় দলের কাছে প্রত্যাশাও বেশি থাকে। পরপর তিনবার সরকারে অধিষ্ঠিত। এজন্য সাধারণ জনগণ আওয়ামী লীগকে সরকারি দল বা ক্ষমতাসীন দল বলে থাকে। কিন্তু সংবিধানে সরকারি দল বা ক্ষমতাসীন দল বলে কোনো কথা নেই। আমি যদি ভুল বুঝে না থাকি, আওয়ামী লীগ আর দশটি দলের মতোই একটি রাজনৈতিক দল। সরকার একটি সাংবিধানিক রাষ্ট্রীয় সংগঠন। এটি অবস্থানের একটি দ্বিমাত্রীকতা। কমিশনের ইচ্ছা, সদিচ্ছা এবং অনুভূতি, সরকার এবং আপনার দলের সবাইকে অবহিত করে বাধিত করবেন।

সিইসি আরও বলেন, অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তাসম্পন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংবিধানের প্রতি অনুগত থেকে আইন ও বিধি-বিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালন করবে। আমরা আশা করি, সবাই কমিশনকে সহায়তা করবে এবং দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সফলতা কামনা করছি।

তিনি বলেন, সংলাপে কিছু বিষয় উঠে এসেছে। অনেক পার্টি মনে করছে একদিনে নির্বাচন করা ঠিক হবে না। ভারতের মতো পৃথক দিনে হওয়া উচিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপ্রতুলতার কথা কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অনেকে বলেছেন সেনাবাহিনী মোতায়েন করার জন্য। জনমানুষের সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা অনেক বেশি বলে তারা মনে করছেন। আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আরেকটি বিষয়ে সংকট থেকে যাবে, সেটা হলো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। ইভিএম নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে সমর্থন পেয়েছি। অধিকাংশ দল ইভিএম বিশ্বাস করছে না। এর ভেতরে কী জানি একটা আছে। ইভিএম নিয়ে আমাদের যে অনুভূতি আমরা ব্যবহার করেছি। ফলাফল ৭১ শতাংশ পর্যন্ত ভোট কাস্ট করেছে। কিন্তু কথা বলেছি আমরাও অনেককেই আস্থায় আনতে পারছি না। কিছু একটা আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নেবো স্বাধীনভাবে। কিন্তু পুরোপুরি ঐকমত্য নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন