অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা এবং কিছু বড় বিষয়ে সমঝোতার প্রয়োজন বলে মনে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে তারা আগ্রহী। এ বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের ইতিবাচক মন্তব্যে ইইউ খুশি হবে।
নির্বাচন ভবনে গতকাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশে ইইউর হেড অব ডেলিগেশন চার্লস হোয়াইটলি এসব কথা বলেছেন। চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে। প্রতিনিধি দলকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিুল আউয়াল বলেন, কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে। মতপার্থক্য থাকার কারণে নির্বাচনী পরিবেশ পুরোপুরি অনুক‚লে নয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হোয়াইটলি বলেন, নির্বাচনে ইসির প্রস্তুতির বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা বেশি হয়েছে। সবাই চায় একটি অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। সবাই তাদের স্বার্থে এটা চায়। এ জন্য সমঝোতা প্রয়োজন। আমরা ইসির কাছে কোনও সুপারিশ করিনি। তারা তাদের কাজ করবে।
হোয়াইটলি বলেন, আমরা ইইউ মিশন থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। নির্বাচন নিয়ে কমিশনের সঙ্গে আমাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে শেষ বৈঠকের পর থেকে এটির আরও অগ্রগতি হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদেশি মিশনের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাদের স্বাগত জানিয়েছেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ইইউ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায়। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে ইতিবাচক। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশনের কাজ ও অগ্রগতিতে প্রযুক্তি ও পরিচালনা-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আরও আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে।
ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে চায় ইইউ। বাংলাদেশে ইইউর হেড অব ডেলিগেশন চার্লস হোয়াইটলি এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের ইতিবাচক মন্তব্যে তারা খুশি। তিনি বলেন, প্রতিনিধি দলকে বলেছি, কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে। মতপার্থক্য থাকার কারণে নির্বাচনী পরিবেশ পুরোপুরি অনুক‚লে নয়। তবে অচিরেই এই মতপার্থক্য দূর হবে এবং সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে আসবে বলে আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছি। কিন্তু নিশ্চিত করে কোনো কিছু বলতে পারিনি। আমরা বলেছি-যদি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়, তাহলে চমৎকার প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের পুরো প্রস্তুতি রয়েছে।
রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকে কোনো পরামর্শ এসেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমি যেটা তাঁদের বলেছি, আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে একাধিকবার বলেছি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা প্রয়োজন এবং বড় বিষয়গুলোতে তাদের মধ্যে অ্যাগ্রিমেন্টের প্রয়োজন আছে। যাতে নির্বাচনটা সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
সিইসি বলেন, ইভিএম সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল, যে ইভিএম নিয়ে অবিশ্বাস আছে কি না। বলেছি, ইভিএম নিয়ে যে অবিশ্বাস ছিল, তা অনেকটা কেটে গিয়েছিল। তবে এটাও জানিয়েছি যে ইভিএম নিয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না। কারণ, আদৌ ইভিএম পর্যাপ্ত হবে কি না। কী পরিমাণ নির্বাচন ইভিএমে করতে পারব, এ বিষয়ে কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্তে আমরা উপনীত হইনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন