কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জগামী ঈগল এক্সপ্রেসের চলন্ত বাসে ডাকাতির পাশাপাশি এক নারী যাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। দেশে আবারও নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। এনিয়ে ক্ষোভে তোলপাড় চলছে সর্ব মহলে।
বৃহস্পতিবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন সেই ভুক্তভোগী নারী। যাত্রীবেশে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী নাইট কোচে উঠে যাত্রীদের হাত-পা চোখ বেঁধে মারধর, সম্পদ লুট করা হয়, ধর্ষণ করা হয় তাকে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহণের একটি বাসে ঢাকা যাচ্ছিলেন ওই নারী। তিনি বলেন, রাত ৮টায় আমি বাসে উঠি। রাত ১১টার পর ডাকাতরা যাত্রীবেশে সিরাজগঞ্জের তিনটি আলাদা জায়গা থেকে বাসে ওঠে। ডাকাতি শুরুর আগে আমার পাশের খালি সিটে ডাকাতদের একজন বসতে চাইলে তাকে বসতে দিইনি। ডাকাতি শুরু করলে আমি তাদের বাধা দিয়েছিলাম। এ কারণে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।
তিনি বলেন, পরে আবার যখন আসে, তখন আমি তাকে বলি আপনি হেলপারকে ডেকে সিট নেন। পরে সে আর সেই সিটে বসেনি। কিছুক্ষণ পর তারা সিগারেট খেয়ে ধোঁয়া দেয় আমাদের গায়ে। এর ১০ মিনিট পরই শুরু করে ছিনতাই। বাসচালকের কাছে গিয়ে তিনজন তাকে জিম্মি করে। চালকের গলায় ছুরি চেপে ধরে সিট থেকে উঠতে বলে। তারা গাড়ি চালাবে বলে জানায়। এর পর তাকে তুলে বেঁধে ফেলে। আমার পাশে বসা হেলপারকে তুলে নেয়। এর পর আমার সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে আমার হাত-মুখ চোখ বেঁধে ধর্ষণ করে।
এঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে ফেসবুকে ফাতেমা খাতুন লিখেছেন, ‘‘অনেক নামকরা বাসের ড্রাইভার, হেল্পার, সুপারভাইজার টিকিট ব্যতীত রাস্তার মাঝে থেকে যাত্রী উঠায় এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আর আমাদের দেশের কিছু অমানুষদের নীতি- নৈতিকতার কথা আর নাই বা বলি।’’
বিচারের দাবি জানিয়ে মোঃ রনি ইসলাম লিখেছেন, ‘‘ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এখন দেখছি বাড়ি থেকে ঢাকা আসার পথে আসার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করতে হয়। সেইসাথে বাস ড্রাইভার কন্টাকটার ও হেলপারের গাফিলতি কারনে মাঝ রাস্তায় থেকে যাত্রী নেওয়ার জন্য তাদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত। দীর্ঘদিন ধরে দৌলতপুর থেকে ঢাকায় আসা যাওয়ার পথে দেখা যায় কন্টাকটার মাঝরাস্তায় বাস থামিয়ে লোকাল এর মত যাত্রী নিচ্ছে। এসব বিষয়ে মালিকদেরকে অবগতি করলেও কোনো সুষ্ঠু সমাধান হয় না যার ফলে এরকম একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটলো। এর দায় মালিক পক্ষও অস্বীকার করতে পারে না। তাই তাদেরও
বিচার হতে হবে।’’
ফারজানা জামানের দাবি, ‘‘ডাকাতগুলোকে যদি ফাঁসি দেওয়া না হয় তাহলে বলবো আমরা আইয়্যামে জাহেলিয়ার যুগে আছি। যেখানে নিরাপত্তা নেই।আজকে সারাটাদিন কেমন কেটেছে এসব নিউজ শুনে। অথচ এসব এর বিচার হবে না। কারন আমাদের আমলারা বিএনপি আর জামায়েত নিয়ে আছে।বাংলাদেশ এ যে সাধারণ জনগণ আছে তাদের খবর নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত কোন ভাইরাল কিছু হবেনা ততক্ষণ পর্যন্ত বিচার হবেনা।’’
ড. মোঃ আব্দুল্লাহ আল-আমিন লিখেছেন, ‘‘কোন দেশে বাস করি আমরা। দেশে কোন কিছুই নিরাপদ নয়। রাস্তায় চলতে মেয়ে-ছেলে কারো নিরাপত্তা নেই। কারণ হলো যারা অপরাধ করে তারা শাস্তি পায় না এজন্য আরো বেপরোয়াভাবে অন্যায় কাজ করে। যদি কয়েক জনকে ধরে ফাঁসি কার্যকর করা হয় তাহলে অপরাধ এমনিতেই কমে যাবে। এরকম অপরাধীদের ফাঁসি চাই।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন