শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সৈয়দপুরে ডাস্টবিন সঙ্কট

চরম দুর্ভোগে পৌরবাসী

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৭ এএম

সৈয়দপুর পৌর এলাকায় বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাস্টবিন নেই। ফলে শহরের প্রধান সড়ক, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত ও আবাসিক এলাকার বাসাবাড়ির সামনে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে করে যেমন শহরের রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন, তেমনি মারাত্মক পরিবেশ দুষণ হচ্ছে। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষের সেদিকে কোন নেক নজর নেই।
নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির সৈয়দপুর পৌরসভা। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ পৌরসভার আয়তন ৩৪ দশমিক ৩৪ বর্গকিলোমিটার। ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সৈয়দপুর পৌরসভা। এ পৌর এলাকায় রয়েছে দেশের বৃহত্তম রেল কারখানা, বিমানবন্দর, সেনানিবাস, বিসিক শিল্পনগরীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস। আরো রয়েছে অভিজাত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যদিও দীর্ঘদিন ধরে সৈয়দপুর পৌরসভার নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। পৌরসভার এলাকার বিদ্যমান সমস্যাগুলোর মধ্যে শহরের জলবদ্ধতা, যানজট, বেওয়ারিশ কুকুর উপদ্রব ও মশার উৎপাত, ডাস্টবিন সঙ্কট অন্যতম।
পৌরসভা প্রধান প্রধান সড়ক ও আবাসিক এলাকায় নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাস্টবিন। পৌরসভার বিগত মেয়রের সময়ে সড়কের পাশে ও আবাসিক এলাকায় বেশ কিছু ডাস্টবিন তৈরি করা হয়। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা বাসা-বাড়ির তুলনায় তা সংখ্যায় অপর্যাপ্ত ও আকারে অনেকক্ষুদ্র। ফলে আবাসিক এলাকার বাসা-বাড়ির দৈনন্দিন ময়লা আবর্জনা এ সব ডাস্টবিনে সংকুলান হয় না। তাই ডাস্টবিনগুলো উঁপচে আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন ময়লা আবর্জনা। অনেক সময় এসব উপচেপড়া ডাস্টবিনে কুকুর, বিড়াল ও গরু ছাগলকে বিচরণ করতে দেখা যায়। আবার অনেক আবাসিক এলাকায় ডাস্টবিন না থাকায় বাসা-বাড়ির ময়লা আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর পৌরসভার থেকে নিয়মিত সে সব ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না করায় সে সব থেকে পচা দূর্গন্ধ ছড়ায় অহরহ। তারপরও পৌরবাসীকে প্রতিদিন ময়লা আবর্জনা পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে সৈয়দপুরে উপজেলা আনসার-ভিডিপি অফিসের সামনে দেখা যায়, একটি জরাজীর্ণ ক্ষুদ্র আকারের ডাস্টবিন উঁপচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে বাসাবাড়ি থেকে এনে ফেলা সব ময়লা আবর্জনা। আর সে সব ময়লা আবর্জনায় অবাধে বিচরণ করছেন কয়েকটি গরু। ডাস্টবিনের পঁচা ময়লা-আবর্জনার পাশ দিয়ে মানুষ নাকে রুমাল চেপে চলাচল করছেন।
সেখানে কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, আমরা নিয়মিত পৌরকর পরিশোধ করছি। অথচ পৌরসভা ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না।
শহরের বাঙালিপুর নিজপাড়া সর্দারপাড়ার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, তার বহুতল বাসার প্রধান ফটকের সামনে রাস্তার ওপর আশপাশের বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে। আর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ নিয়মিত সে সব অপসারণ না করায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে আবর্জনার পঁচা দুর্গন্ধে বাসাবাড়িতে অবস্থান করা প্রায় দুরূহ হয়ে পড়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা সত্ত্বেও তারা কোন কর্ণপাত করছেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে, শহরের বিমানবন্দর সড়কে অবস্থিত অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান ফটকের পাশের হাতিখানা যাওয়ার রাস্তার ওপর গোটা হাতিখানা এলাকার বাসা-বাড়ির ময়লা আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে প্রতিদিন। এতে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা প্রতিষ্ঠানটিনতে আসা যাওয়ার সময় মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) শফিয়ার রহমান সরকার প্রতিষ্ঠানের যাওয়া আসার রাস্তায় এলাকার বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা দ্রুত সময়ে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার জন্য সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজ অধ্যক্ষের চিঠি পাওয়ার পর মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী সরেজমিনে লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজে আসেন। এ সময় তিনি প্রতিষ্ঠানের পাশের সড়কে ময়লা আবর্জনা ফেলা হবে না মর্মে কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। কিন্তু তারপরও লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের পাশে সড়কে আশপাশের এলাকার বাসা-বাড়ির দৈনন্দিন ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর পৌর মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বলেন, এসব ময়লা-আবর্জনা তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন