শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বরিশাল-খুলনা-মোংলা মহাসড়কে ‘৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করল চীন সরকার

আগামী মাসে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০২২, ৩:০৩ পিএম

প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বরিশাল-খুলনা-মোংলা মহাসড়কের বেকুঠিয়াতে কঁচা নদীর ওপর ‘৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’ চীনা সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর সম্পন্ন হবার পরে এখন শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই’র উপস্থিতিতে গত রোববার ঢাকাস্থ চীনা দুতাবাসের ইকনোমি মিনিষ্টার বাংলাদেশর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সচিবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি হস্তান্তরের দলিলে স্বাক্ষর করেন বলে সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। ‘৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’ নির্মানে চীন সরকার ৬৫৫ কোটি টাকার সম্পূর্ণ অনুদান প্রদান করেছে।

চীনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেতুটির পরিপূর্ণ নকশা প্রনয়ন সহ কাজের তত্বাবধানে পরামর্শকও নিয়োগ করে। ‘চায়না রেলওয়ে ১৭তম ব্যুরো গ্রæপ কোম্পানী লিমিটেড’ ৯টি স্প্যান ও ৮টি পিয়ার বিশিষ্ট এসেতুটির নির্মান কাজ গত ৩০ জুনের মধ্যে সম্পন্ন করে সড়ক অধিপ্তরকে অবহিত করার পরে গত রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে তা হস্তান্তর করা হল। এ সেতুটি নির্মানের ফলে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চরে সাথে খুলনা দুরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাথে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার হ্রাস পাবে। এরফলে ঢাকাÑচট্টগ্রাম ও ঢাকাÑমাওয়াÑখুলনা মহাসড়কের ওপর যানবাহনের চাপও অনেকটাই হ্রাস পাবে। পাশাপাশি নদ-নদী বহুল দক্ষিণাঞ্চলের আরো একটি মহাসড়ক সম্পূর্ণ ফেরিমূক্ত হল।

চীনা প্রেসিডেন্ট-এর বাংলাদেশ সফরকালে ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর ৮ম চীনÑবাংলাদেশ মৈত্রী সেতু নির্মানে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর দু বছর পরে ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর ‘প্রী-স্ট্রেসড কংক্রীট বক্স গার্ডার’ ধরনের এ সেতুটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতুটি নির্মানে প্রায় পৌনে ২শ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যায় করা হচ্ছে। যে অর্থে সেতুটির উভয়প্রান্তে প্রায় দেড় কিলোমিটার সংযোগ সড়কের জন্য ১৩.৩২ হেক্টর ভ’মি অধিগ্রহন সহ প্রশাসনিক ব্যায় এবং সিডি-ভ্যাট পরিশোধ সহ টোল প্লাজা নির্মানে ব্যায় হয়েছে।
কঁচা নদীর ওপর প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ মূল সেতুটির উভয় প্রান্তে ৪৯৫ মিটার ভায়াডাক্ট সহ সেতুটির মেআট দৈর্ঘ প্রায় ১৫শ মিটার । ১৩.৪০ মিটার প্রস্থ সেতুটির পিরোজপুর ও বরিশাল প্রান্তে ১ হাজার ৪৬৭ মিটার সংযোগ সড়ক সহ পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘœ রাখতে আরো ২টি ছোট সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম, বরিশাল এবং মোংলা বন্দর সহ খুলনা নদী বন্দরের সাথে পণ্য ও জ¦ালানিবাহী বড় ধরনের নৌযানের চলাচল নির্বিঘœ রাখতে কঁচা নদীর সর্বোচ্চ জোয়ারের থেকে ৬০ ফুট উচ্চতায় সেতুটি নির্মিত হয়েছে। ফলে নৌ বাহিনীর ফ্রিগেট সহ যেকোন ধরনের যুদ্ধ জাহাজের চলাচলেও কোন প্রতিবন্ধকতা থাকছে না। এমনকি কঁচা নদীর মধ্যভাগে সেতুটির তলদেশে সবচেয়ে প্রসস্ত স্প্যানটিতে ১২২ মিটার এলাকা নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে মূল সেতু ও সংযোগ সড়ক সহ নদী শাষন ও অত্যাধুনিক কম্পিটিউরাইজড টোল প্লাজার নির্মীন কাজও প্রায় শেষ হয়েছে।
আগামী মাসের যেকোন সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন বলে ইতোমধ্যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সড়ক পারিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন