বিদেশ গমনেচ্ছুকদের ভূয়া ভিসা ও টিকেট দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনে জনশক্তি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে এসব বিদেশ গমনেচ্ছুক বেকার যুবক-যুবতিদের কাছ থেকে থেকে ৩-৪ লাখ টাকা করে হাতিয়ে ভূয়া ভিসা এবং টিকেট ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দেয়। বিমানবন্দরে প্রদর্শন করার পর ইমেগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের ভিসা ও টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয়।
রাজধানীর পল্টন এলাকায় বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে এমন একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
চক্রটি ২০১৮ সাল থেকে গত ৪ বছরে অবৈধভাবে অর্ধশতাধিক নারীকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে পাঠায়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. জাবেদ হোসেন রকি (৩৩) ও মো. আবির ওরফে শুভ (২৭)।
এসময় তাদের কাছ থেকে ৫টি পাসপোর্ট, ২০টি খালি স্ট্যাম্প, ১০টি ট্রেনিং সার্টিফিকেট, ২টি ভূয়া ওমান কনস্যুলেটর ও দূতাবাসের সীল, একটি মোবাইল ফোন, ভিজিটিং কার্ড, প্রায় শতাধিক ভূয়া ভিসার ফটোকপি, ৫০টি কোভিড-১৯ এর ভূয়া রিপোর্ট এবং ৩টি চেকের পাতা উদ্ধার করা হয়েছে।
এবিষয়ে র্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, মতিঝিল এলাকায় একটি মানবপাচার ও প্রতারক চক্র মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানির প্রলোভন দেখিয়ে ভূয়া ভিসা ও টিকেট দিয়ে বিদেশ গমনেচ্ছুক বেকারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে কয়েকজন ভিকটিমের অভিযোগ জানায়।
তিনি বলেন, বিদেশ গমনেচ্ছুকরা ওই ভূয়া ভিসা ও টিকেট বিমানবন্দরে প্রদর্শন করার পর ইমেগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের ভিসা ও টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে বীণা রানী বলেন, গ্রেপ্তার জাবেদ চক্রের মূলহোতা এবং আবির তার সহযোগী। জাবেদের মাতা সেলিনা বেগম ওরফে রোকেয়াও চক্রের সাথে জড়িত। তিনি ২০০৪ সাল থেকে ওমানে আছেন। ওমানের একটি রিক্রুটিং এজেন্সিতে কর্মী হিসেবে কাজ করেন। জাবেদের মা ২০১৮ সাল থেকে ওমানে অবস্থান করে চক্রকে সহযোগিতা করছেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তাদের জনশক্তি রপ্তানির কোনো লাইসেন্স নেই। কিন্তু তারা দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রপ্তানির নামে অবৈধভাবে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে লোক পাঠাচ্ছে।
এছাড়াও চক্রটি মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনে জনশক্তি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনেচ্ছুক বেকার যুবক-যুবতিদের কাছ থেকে থেকে ৩-৪ লাখ টাকা করে হাতিয়ে ভূয়া ভিসা এবং টিকেট ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দেয়।
র্যাবের পুলিশ সুপার বীণা রানী বলেন, চক্রটি ২০১৮ সাল থেকে গত ৪ বছরে অবৈধভাবে অর্ধশতাধিক নারীকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে পাঠায়। যারা বিদেশ গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন