সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

২০ বছরেও নির্মিত হয়নি সেতু

ফুলদি ও মেঘনা সেতু হতে পারে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সেতুবন্ধন

মুন্সীগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

গজারিয়ায় ভিত্তিপ্রস্তরের দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পরও ফুলদি নদীর ওপর সেতু নির্মিত হয়নি। সময়ে সময়ে রাজনীতিবিদরা শুধু আশ্বাশের বাণী শুনিয়েছেন। সেতু নির্মাণের কোন ফলপ্রসু উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। সেতু নির্মাণে কাজের ফাইল বছরের পর বছর লাল ফিতায় বন্দি রয়েছে। গজারিয়া উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ফুলদি নদীর ওপর সেতু নির্মিত না হওয়ায় নদীর পশ্চিম ও পূর্ব পাশের লক্ষাধিক জনসাধারণকে যাতায়াতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হচ্ছে। প্রথমে উপজেলা প্রশাসনিক ভবন সমূহ নদীর পশ্চিম পাশে গজারিয়া ইউনিয়নের গোসাইরচরে নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে সংযোগের জন্য উপজেলা কমপ্লেক্স নদীর পূর্ব পাশে ইমামপুর ইউনিয়নের রসুলপুরে সরিয়ে নেয়া হয়। এতে প্রশাসনিক কার্যক্রমের সুবিধা হলেও স্থানীয় এলাকাবাসীদের যাতায়াতের দুর্ভোগ রয়েই গেছে।
জানা যায়, গজারিয়াবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির পেক্ষিতে বিএনপি সরকারের সময়ে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রয়ারি রসুলপুরে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর বিভিন্ন কারিগরি আর অর্থনৈতিক বিবেচনার অজুহাতে নির্মাণ কাজের আর কোন অগ্রগতি হয়নি। গজারিয়াবাসী শুধু আশ্বাশের বাণী শুনতে শুনতে দীর্ঘ ২০ বছর পার করেছে। হোসেনদি গ্রামের মো. আজহার উদ্দিন জানান, ফুলদি নদীর ওপর সেতু নির্মিত না হওয়ায় রসুলপুর, দৌলতপুর, গজারিয়া, হোসেনদি, ইসমানিচর, আধারমানিক গ্রামের লক্ষাধিক গ্রামবাসীকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গজারিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ, গজারিয়া পাইলট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গজারিয়া পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয় এবং গজারিয়া বাতেনিযা আলীম মাদরাসার শিক্ষার্থী এবং বৃদ্ধদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকায় নদী পারি দিতে হয়। বর্ষা মৌসুমে এ দুর্ভোগ চরমে উঠে। নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে ফেরির পল্টুন ডুবে যায়। তখন খেয়া নৌকা দিয়েও পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বর্তমানে শুধুমাত্র যানবাহন পারাপারের জন্য ফুলদি নদীতে ফেরি চলাচল করছে।
ফুলদি নদীর উপর সেতু নির্মাণের বিষয়টি ২০১১ সালে একনেকের বৈঠকে উপস্থাপিত হয়। প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত না থাকায় এবং সেতু নির্মাণের গুরুত্ব বিবেচনায় সে সময় একনেকের বৈঠকে সেতু নির্মাণের বিষয়টির ব্যাপারে কোন সিন্ধান্ত না হওয়ায় ঝুলে পরে সেতু নির্মানের বিষয়টি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নারায়নগঞ্জ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মেহেদী ইকবাল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষিতে যানবাহন চলাচলের অধিকতর গুরুত্ব না থাকায় ফুলদি নদীর উপর সেতু নির্মাণের কোন পরিকল্পনা আপাতত নেই। গজারিয়ার সাথে মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের সড়ক পথে যোগাযোগের জন্য মেঘনা নদীতে সেতু নির্মানের একটি পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। ইতোমধ্যে সেতু বিভাগ প্রাথমিক জরিপ কাজ সম্পন্ন করেছে। মেঘনা নদীতে সেতু নির্মিত হলে সাথে সাথে ফুলদি নদীর উপরও সেতু নির্মিত হবে।
গজারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ফুলদি নদীর ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পটি কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে না। যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প হিসেবে ফুলদি নদীতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ফেরি চলাচল করছে।
ফুলদি নদীর ওপর সেতু নির্মাণসহ মেঘনা নদীতে সেতু নির্মিত হলে দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার সাথে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চলের সেতু বন্ধন হবে। গজারিয়ায় বাস্তবায়নাধীন শিল্পপার্ক, গার্মেন্টস পল্লী এবং ঔষধ শিল্পপার্ক এর মালামাল সহজে দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার পরিবহন করা যাবে। সেতু দুইটি নির্মিত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সংগে খুলনার মংলা ও পায়রা বন্দরের সড়ক যোগাযোগে প্রবেশদ্বার হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন