ইংল্যান্ডের ম্যাচে ফিরতে দ্বিতীয় ইনিংসে অসাধারণ ব্যাটিং করতে হত। অসাধারণ ত দূরের কথা, রাবাদা-নকিয়েদের আগুনঝরা বোলিং এর সামনে গড়পড়তা ব্যাটিংও করতে পারেনি দলটির অতি আগ্রাসী ব্যাটসম্যানরা। আর তাতে লডর্স টেস্টের তৃতীয় দিনেই ইনিংস ও ১২ রানের বড় জয় তুলে নিয়েছে প্রোটিয়ারা।
এই গ্রীষ্মেই ইংল্যান্ড টেস্ট টিমের কোচ হিসেবে যোগ দেওয়া ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম দলের টেস্ট ব্যাটিং মনোভাব পুরোপুরি পাল্টে ফেলেছিলেন। আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলার এ মনোভাব 'বাজবল' নামে পরিচিতি পেয়েছিল। তখন অনেকেই বাইরের কন্ডিশনে কিংবা অতিরিক্ত বোলিং সহায়ক পিচে এই টেকটিকস কতটা কাজ দিবে সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
তবে তার দায়িত্ব নেওয়ার পর ইংল্যান্ড টানা চারটি টেস্ট ম্যাচ জিতে নিলে সে সব সমালোচনা খুব একটা জোর পায়নি। উল্টো ইংল্যান্ড সমর্থকদের কাছে এই কৌশল দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল। বোলিং ফ্রেন্ডলি পিচে বিশ্বমানের পেসারদের সামনে অতি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত খুব যে সুবিবেচনাপ্রসূত হবেনা,সেটি ইংল্যান্ড ভালোভাবেই টের পেয়েছে এই টেস্টে।
রাবাদা-জেনসন-নকিয়েদের বিরতিহীন বোলিং তোপে অনেকটা অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। ক্রিজে নতুন এসে সময় নিয়ে সেট হওয়ার পরিবর্তে শর্ট খেলার খেসারত ইনিংস হারের মাধ্যমেই দিয়েছে ইংল্যান্ড। টেস্ট ক্রিকেটের এক নম্বর ব্যাটসম্যান জো রুটও ছিলেন অনেকটা নিষ্প্রভ এই ম্যাচে। দুই ইনিংসের কোনটিতেই তিনি দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি।
গতকাল দিনশেষে সাউথ আফ্রিকার দলীয় সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৯ রান। ১২৬ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করা সাউথ আফ্রিকা আজ দলীয় সংগ্রহে আরো ৩৫ রান যোগ করেছে।৩২৬ রান ইংনিস শেষ হওয়ার আগে প্রোটিয়ারা নিয়ে নেয় ১৬১ রানের বিশাল লিড। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন বেন স্টোকস ও স্টুয়ার্ট ব্রড।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেনি দুই ওপেনার। পিচ স্পিন সহায়ক বুঝতে পেরে ডিন এলগার তার স্পিনার মহারাজকে দ্রুত বোলিংয়ে আনেন। বল হাতে মহারাজ অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবেই। প্রথম ওভারে তুলে নিয়েছেন জ্যাক ক্রলির উইকেট। এরপর তিনি দ্রুত সাজঘরে ফেরান প্রথম ইনিংসের ফিফটি করা ব্যাটসম্যান ওলি পোপকে।
তারপর থেকে অনেকটা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা।এলেক্স লিস ও বেন ফোকসকে একই ওভারে ফিরিয়ে নকিয়ে ইংলিশদের মনে ইনিংস পরাজয়ের ভয় ঢুকিয়ে দেন।৮৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যাওয়া ইংল্যান্ডকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন বেন স্টোকস ও স্টুয়ার্ট ব্রড। তাদের দ্রুত গতির অর্ধশত রানের জুটিতে মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড ইনিংস হার এড়াতে পারবে।
তবে বোলিংয়ে ফিরে সেটি আর হতে দেননি রাবাদা।পরপর দুই ওভারে ব্রড ও স্টোকসকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডের ইনিংস হারের লজ্জা নিশ্চিত করেন এ সাউথ আফ্রিকার পেসার। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কারও উঠেছে এই গতি তারকার হাতে।তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে আগামী ২৫ আগস্ট ম্যানচেস্টারে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন