রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বিদ্যালয় মাঠে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম

| প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : রূপগঞ্জের সদর ইউনিয়ন ও দাউদপুর ইউনিয়নের কিছু মৌজায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) পূর্বাচল উপশহর বাস্তবায়নের কাজ করছে পুরোদমে। ফলে এই এলাকায় পূর্ব থেকে প্রতিষ্ঠিত ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট, পাঠদান সমস্যা, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ও বিদ্যালয়ের মাঠ দখলের মতো নানা সমস্যা নিয়ে চলছে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রম। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পূর্বাচল উপশহর সীমানায় হিড়নাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসুফগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হারারবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলমপুরা কমিউনিটি স্কুল, গুতিয়াব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিতলগঞ্জ-ব্রাহ্মণখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধামছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পলখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পারাবর্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কালনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক। পূর্বাচল উপশহর একোয়ার পরবর্তী স্থানীয় আদিবাসীরা তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নিলে এই এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা তুলনামূলক কম বলে জানা গেছে। তবে পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, স্কুল মাঠে পাকা স্থাপনা করে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকটের মতো ভয়াবহ চিত্রও দেখা গেছে। ১৩নং হিড়নাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, হিড়নাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ৩৮ বছরের পুরনো। পূর্বাচলের সীমানা নির্ধারণের পূর্ব থেকেই ৩৩ শতক জমিতে এই প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান হলেও স্থানীয়  হাবুল্লা ও আতিকুল্লাসহ একটি কুচক্রী মহল জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের মাঠে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে দোকান ঘর তৈরি করেছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। গুতিয়াব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান পূর্বাচলের ৪ ও ৫ নং সেক্টরের পাশে। এখানে দেখা যায় ভয়াবহ চিত্র। স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পুরনো ভবনের অভ্যন্তরে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন। ছাদের রড বেরিয়ে, দেয়ালেও ফাটল ধরে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। শিক্ষকরাও এ অজুহাতে নিয়মিত আসেন না প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠান প্রধান কাজল মাস্টার বলেন, উপশহর বাস্তবায়নের কাজ করার অজুহাতে উপজেলা প্রশাসন আমাদের দিকে নজর দেন না। ফলে আমরা অবহেলিত। শিক্ষার্থী সংকট থাকায় এমনটা হয়েছে বলে অভিযোগ তার। অপরদিকে ৪নং সেক্টরের পিতলগঞ্জ-ব্রাহ্মণখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান লোকালয়ের পাশে হওয়ায় এখানে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তবে বিদ্যালয় ভবনের অফিস কক্ষ ও শ্রেণিকক্ষের মালামাল চুরি যাওয়ার আতঙ্কে থাকেন এই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। দুজন নৈশপ্রহরী নিয়োগ করেও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, উপশহর সীমানায় থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নানা সমস্যা রয়েছে। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ন্যায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অত্র স্কুলে পর্যাপ্ত। তবে পুরাতন ভবনে পাঠদান ও সীমানা জটিলতার মতো মৌলিক সংকট রয়েছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, পূর্বাচল উপশহর এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামীনা জটিলতা ও ভবন মেরামত অচিরেই না করা হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। সূত্র জানায়, পূর্বাচলের ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। এখানকার প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের তেমন মাথাব্যথা নেই বললেই চলে। এসব বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, উপজেলার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় পূর্বাচলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও আমাদের নজরে রয়েছে। তবে এ এলাকায় শিক্ষার্থী সংকট থাকায় কিছুটা সমস্যা রয়েছে। তাদের সমান সুযোগ দেন বলে জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, পূর্বাচলের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বিষয়ে জেনেছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখলদারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, সীমানা জটিলতা বিষয়টি রাজউকের এখতিয়ার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন